বৃষ্টিতে ফতুল্লায় দেয়াল ধ্বস, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নারায়ণগঞ্জ মেইল: ফতুল্লার কুতুবপুরের নয়ামাটিতে ভয়াবহ দেওয়াল ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। জনৈক শওকত মিয়ার মালিকানাধীন ওই দেওয়াল বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ভেঙে পড়ে। বহুদিনের পুরোনো ও ঝুকিপূর্ণ ওই দেওয়াল ধসে পড়ার সময়ে কয়েকজন নারী, শিশু ও পথচারী ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে নিরাপদে সরে আসেন। ফলে হতাহতের আশঙ্কা থাকলেও তা থেকে তারা রক্ষা পান৷ ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহুদিনের পুরোনো ওই বাউন্ডারি দেওয়ালটি একেবারেই জরাজীর্ণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন তরুণ জানান, শওকত মিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে ওই দেওয়াল ভেঙে ফেলতে বলা হচ্ছিলো এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে। দেওয়ালটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই তাকে ওই অনুরোধ করা হলেও তিনি উল্টো দাপট দেখাচ্ছিলেন৷ এমনকি কেউ এ বিষয়ে কথা বললে তাকে বিভিন্ন হুমকিও দিচ্ছিলেন।

এলাকাবাসী আরো জানান, একসময়ের হতদরিদ্র পরিবার থেকে বিভিন্ন উপায়ে কিছুটা অর্থের মালিক হওয়ায় শওকত মিয়া কারো কথায় কর্ণপাত করতে চান না৷ শওকতের ভাই জমি ব্যবসায়ী, বহুল বিতর্কিত ব্যক্তি রেজাউল করিমকেও নিয়েও ওই অঞ্চলে সমালোচনার শেষ নেই। পাগলা স্কুলের ভেতরে ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্যের সাথে প্রকাশ্যে মারামারি করে বেদম ধোলাই খেয়ে ছেড়া পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় অফিস কক্ষে চিৎপটাং হয়ে পরে থাকা তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতি সম্প্রতি ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি করে।

এলাকাবাসী জানান, বিভিন্ন কৌশলে নানানজনের সাথে ছবি তুলে সেই ছবিকে জালিয়াতি, দুর্নীতি ও অপকর্মে ব্যবহার করে থাকেন কিছু আধাশিক্ষিত, বাটপার শ্রেণির লোক৷ এ ধরণের টাউটদের হাতে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও একেবারে খাদের কিনারায় চলে যাচ্ছে।

দুর্নীতি-জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল ও পাগলা স্কুলকে ঘিরে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগের কথাও জানান এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, রেজাউল ও শওকত জনসাধারণের কোনো কথায়ই কর্ণপাত করেন না। অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে শওকত বলেন, ‘এলাকাবাসী অনেকদিন দেওয়াল ভেঙে দিতে বলেছিলো, একথা সত্যি৷ আর বৃষ্টির কারণে দেওয়াল ভেঙেছে৷’

বৃষ্টি তো স্বাভাবিক বিষয়, আপনি আগে কেন দেওয়ালটি ভেঙে দেননি- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে তিনি বলেন, ‘যারা রিপোর্ট করাবে তারাই দেওয়ালটি ফেলে দিয়েছে হয়তো৷ তবে ভাগ্য ভালো কেউ আহত বা নিহত হয়নি।’ কেউ আহত বা নিহত হওয়ার মতো ঝুঁকি ছিল কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ, ছিল৷

অন্যদিকে এই ঘটনার পরে এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছেন৷ তারা চাইছেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন ভাঙা দেওয়াল অপসারণ করে ওই স্থানটিকে ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়৷

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ