নারায়ণগঞ্জ মেইল: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন যেনো সোনার হরিন হয়ে দেখা দিয়েছে। বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে আর তাই আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ ভোটারদের কাছে এখন প্রথম পছন্দ। দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি ব্যক্তি ইমেজও ভোটারদেও কাছে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। সেই দৃষ্টিকোন থেকে দলীয় ও ব্যক্তি ইমেজে নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো: গিয়াসউদ্দিন ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। তাই নারায়ণগঞ্জ-৪ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাদের দুইজনের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন রানৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রভাবশঅলী নেতা শামীম ওসমানকে পরাজিত করার অভিজ্ঞতা। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মো: গিয়াসউদ্দিন নারায়য়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও এ নির্বাচনের কিছুদিন আগে পর্যন্ত গিয়াসউদ্দিন আওয়ামীলীগেরই প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। শামীম ওসমানের কারনে এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নির্বাচনের কিছুদিন আগে বিএনপিতে যোগ দেন এবং বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।
সূত্র বলছে, ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় মো: গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিএনপির নেতাকর্মীরা মেেন করেন বাকিদের চেয়ে গিয়াস্উদ্দিনের রাজনৈতিক সক্ষমতা অনেক বেশি। দলীয় ভোট ছাড়াও নিরপেক্ষ অনেক মানুষের পছন্দে রয়েছেন তিনি। বিশেষ করে এ অঞ্চলে শামীম ওসমান বিরোধীদের প্রথম পছন্দ মো: গিয়াসউদ্দিন।
তাছাড়া ছন্নছাড়া জেলা বিএনপিকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন। জেলা বিএনপির দায়িত্ব পাওয়ার পরে সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিট কমিটি গঠন করেন তিনি। তৃনমূলের মতামতের ভিত্তিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদেও বাছাই করে একটি শক্তিশালী ইউনিট গঠন করেন। তাই তৃণমূলের প্রথম পছন্দ মো: গিয়াসউদ্দিন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের প্রধান্য দেয়া হবে। সেদিক থেকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। বিগত সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে উজ্জল ভূমিকার পাশাপাশি একজন সৎ নির্ভিক ভদ্রলোক হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত নাম হচ্ছে এডভোকেট সাখাওয়াত। রাজপথের পাশাপাশি ক্লিন ইমেজের যুগলবন্দি হচ্ছেন সাখাওয়াত।
২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে আর ক্ষমতার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এ সময়ের মধ্যে স্বৈরাচারি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ফলস্বরূপ হাসিনার পালিত পুলিশ বাহিনীর দেওয়া অসংখ্য মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে দিনের পর দিন তাদেরকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাযাবর জীবন যাপন করতে হয়েছে, জেল খাটতে হয়েছে বারবার। এ সময়ে রাজপথের সবচেয়ে আলোচিত নাম হচ্ছে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। সরকার বিরোধী যে কোনো কর্মসূচিতে সবার আগে থাকতেন তিনি। নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পুলিশের সাথে লড়াই করেছেন, পুলিশের হামলার স্বীকার হয়েছেন এমনকি জেলও খেটেছেন একাধিকবার তবুও রাজপথ থেকে সরে আসেননি।
২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় চরম সাহসিকতার সাথে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার ও তার এলিট বাহিনীর বিপক্ষে গিয়ে আইনী লড়াই করেছেন বুক চিতিয়ে। ক্ষমতাশীণদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এবং কোটি টাকার লোভনীয় অফারকে দুপায়ে মাড়িয়ে তিনি সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে লড়ে গেছেন এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি পর্যন্ত আইনী লড়াই চালিয়ে গেছেন যা এখনও নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে বিরল ঘটনা হিসেবে সমাদৃত হয়ে আছে।
এছাড়াও গত ১৫ বছর ফ্যাসিষ্ট সরকারের দেওয়া অসংখ্য মিথ্যা মামলায় আসামী হওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মামলা বিনা খরচে লড়ে গেছেন এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। নারায়ণগঞ্জ আদালতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ভরসার আশ্রয়স্থল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এই আইনজীবী নেতা। আইনী সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে কে কার লোক এটা কখনো বিবেচনা করেননি তিনি। এমনও ঘটনা ঘটেছে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে যে বিএনপি নেতাকে তিনি জামিন করিয়েছেন সে নেতা ঐদিনই তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, এমনকি সাখাওয়াতের বহিস্কারও দাবি করেছেন। তবুও তিনি পিছপা হননি।
রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের কারনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সবচেয়ে সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করছেন এডভোকেট সাখাওয়াত। দলের ভারপ্রাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুদৃষ্টির পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থা ও ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন তার অবস্থান।