বদলে যাওয়া বিএনপির রূপকার গিয়াস-সাখাওয়াত

নারায়ণগঞ্জ মেইল: বদলে গেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছেন নেতাকর্মীরা। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজপথে ঝড় তুলছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। এসব কিছুর পেছনের রূপকার হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির দায়িত্ব পাওয়া দুই জাঁদরেল নেতা সাবেক এমপি মো: গিয়াসউদ্দিন এবং নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার বাদি পক্ষের লড়াকু আইনজীবী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির দায়িত্ব এ দুজনের চওড়া কাঁধে অর্পণ করার পর থেকেই ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে দৃশ্যপট। দায়সারা কর্মসূচি পালনের সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে এসে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তারা এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিকে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ ইউনিটে পরিনত করেন।

 

সূত্রে প্রকাশ, গত বছরের ১৫ নভেম্বর সাবেক এমপি মো: গিয়াসউদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির নয় সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি ঘোষনার পর থেকেই লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। জেলা বিএনপির আহবায়ক মো: গিয়াসউদ্দিনও কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি কর্মসূচি সফলভাবে আয়োজন করেছেন এবং পাশাপাশি সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য জেলা বিএনপির অন্তর্গত ১০টি ইউনিট কমিটি গঠনে জোর তৎপরতা চালান। ফলস্বরূপ খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল ইউনিটের সম্মেলন শেষ কওে গত ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলন সফলভাবে সমাপ্ত করেন। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: গিয়াসউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন গোলাম ফারুক খোকন। এরপর থেকে সরকারবিরোধী যে কোনো কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি চমকের পর চমক উপহার দিয়ে আসছে। নেতাকর্মীদের জনস্রোতে ঢাকা কিংবা নারায়ণগঞ্জের রাজপথ উত্তাল থাকছে সব সময়। আর এসব কিছুর পেছনে জেলা বিএনপির সভাপতি মো: গিয়াসউদ্দিনের সুদুরপ্রসারী নেতৃত্বগুনকেই বাহবা দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

 

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি গত চার পাঁচ বছর যাবত ছিলো গৃহবন্দি। তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট আবুল কালামের বাসভবনে বসে দোয়া ও আলোচনা সভা বাদ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ঝড় তুলছেন। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে নেতৃত্ব পরিবর্তনে। নিস্ক্রিয় কালাম-কামালের পরিবর্তে তুখোর নেতা এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান দায়িত্ব পেয়েই বদলে দিয়েছেন সকল দৃশ্যপট। এখন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের বুকে যেকোনো কর্মসূচিতে লড়াকু মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে।

 

তৃণমূলের মতে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আগের নেতৃত্ব ছিলো দুর্বল ও নিস্ক্রিয়। তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম দীঘূদিন যাবত সক্রিয় রাজনীতি থেকে দুরে ছিলেন। তাছাড়া শারিরীকভাবেও তিনি বেশ অসুস্থ্য থাকায় আন্দোলন সংগ্রামে থাকতেন অনুপস্থিত। আর সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বছরের বেশিরভাগ সময়ই থাকতেন সুদুর আমেরিকায়। তাই দলীয় কর্মসূচি পালন হতো অনেকটা দায়সারাভাবে। বেশিরভাগ কর্মসূচি পালন করা হতো সভাপতি আবুল কালামের বাড়ির চারদেয়ালের মধ্যে। সেই থেকে মহানগর বিএনপির নাম হয়ে গিয়েছিলো গৃহবন্দি বিএনপি।

 

গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মহানগর বিএনপির সেই নিস্ক্রিয় কমিটি বিলুপ্ত করে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক এবং এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। এরপর থেকেই নারায়ণগঞ্জের রাজপথ মহানগর বিএনপির দখলে চলে যায়। আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি মহানগর বিএনপির আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো গঠনের লক্ষ্যে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। অবশেষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন সদর থান, বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা এবং সদর থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ড ও বন্দর থানার অন্তর্গত ৯টি ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলনের মাধমে গঠন করেন। এখন মহানগর বিএনপির সম্মেলন আয়োজনের অপেক্ষায় তারা। সংগঠনকে শক্তিশালী করে এখন নারায়ণগঞ্জ শহরের রাজপথ দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। যে কোনো কর্মসূচিতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে শোডাউন করছেন তারা। আর এসব কিছুর পেছনে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের বিচক্ষনতা আর দুরদর্শিতার প্রশংসা করছেন সবাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ