নারায়ণগঞ্জ মেইল: প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনের মনোনয়ন নিয়ে চরম নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে থাকে। নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন দুটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবার তীব্র বিরোধীতা করেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেই নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন দাবিতে অনঢ় অবস্থান নিয়েছে আওয়ামীলীগের একটি পক্ষ। নির্বাচনের বাকি আছে আর মাত্র কয়েক মাস। এ সময়ের মধ্যে এই বিরোধ নিরসন করতে না পারলে দলকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে মনে করছে আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
তৃণমূল সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রভাবশালী এমপি হলেন একেএম সেলিম ওসমান। তবে তিনি আওয়ামীলীগের এমপি নন। তিনি জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সদর-বন্দর আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে নয় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এই জেলার সবকয়টি আসনে নৌকার প্রার্থী চান তারা। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও এ আসনে নৌকার দাবিতে একাট্টা হয়েছিলেন প্রায় এক ডজন আওয়ামীলীগ নেতা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো: বাদল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আনিসুর রহমান দিপুসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা এ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। যদিও দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে তারা সেবার লাঙলের মনোনয়ন মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর তারা এ আসনে লাঙলকে ছাড় দিতে রাজি না। যে কোনো মূল্যে তারা এ আসনটি নৌকার দখলে নিতে মরিয়া অবস্থানে রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য হলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। এ আসনটিও জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবার পক্ষে নন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। বিশেষ করে এ আসনে আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু দলের হাইকমান্ড আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে শেষ মুহুর্তের নাটকীয়তায় তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এবারো তিনি এ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। স্থানীয় আওয়ামীলীগের একটা বড় অংশও রয়েছে কায়সার হাসনাতের পাশে। তাই জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার এবার এই আসনে লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে নেতাকর্মীদের মনে।