গিয়াসের ছায়া খোকন, বিকল্প খুঁজছে তৃণমূল

নারায়ণগঞ্জ মেইল: আগামী ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে যতটুকু উন্মাদনা তার সবটুকুই সাধারণ সম্পাদক পদটিকে ঘিরেই। কারণ সভাপতি পদে বর্তমান আহবায়ক মো: গিয়াসউদ্দিনের এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের উপর অসন্তুষ্ট তৃণমূল। আহবায়ক কমিটি ঘোষনার পর থেকেই গিয়াসউদ্দিনের ছায়া হয়ে ছিলেন সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। মাঠে ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামে খোকনের অবদান ছিলো শুধুই উপস্থিতি যেখানে অনেক প্রোগ্রামে তিনি উপস্থিতও হননি। জেলা বিএনপির অনুষ্ঠানগুলির ব্যানারে সঞ্চালক হিসেবে খোকনের নাম থাকলেও সঞ্চালনা করতে দেখা গেছে যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব কিংবা শহিদুল ইসলাম টিটুকে।

 

এদিকে নিস্ক্রিয় খোকনের পরিবর্তে বিকল্প খুঁজছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আর এ ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব এবং শহিদুল ইসলাম টিটু। সম্মেলনে যদি কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করা হয় তাহলে গোলাম ফারুক খোকনের উইকেট পড়ছে তা প্রায় নিশ্চিত।

 

জানা যায়, গত বছরের ১৫ নভেম্বর সাবেক এমপি মো: গিয়াসউদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির নয় সদস্যেও আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি ঘোষনার পর থেকেই লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। জেলা বিএনপির আহবায়ক মো: গিয়াসউদ্দিনও কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি কর্মসূচি সফলভাবে আয়োজন করছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই তিনি পাশে পাননি না সংগঠনের সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনকে। নানা অজুহাতে খোকন এসব রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে অনুপস্থিত থেকেছেন। যা তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

 

এর আগে জেলা যুবদলের দায়িত্বে থাকার সময়ও গোলাম ফারুক খোকন রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন না। রূপগঞ্জের একে প্রভাবশালী বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় থেকে সরকারী দলের সাথে লিয়াজো করেই তিনি চলে এসেছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে নেই তেমন কোনো রাজনৈতিক মামলা। জেলা যুবদলের সেক্রেটারী চিলেন, বর্তমানে আহবায়ক পদটিও দখলে রেখেছেন কিন্তুতাকে রাজপথে খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায়না। মাঝে মধ্যে দুএকটা কর্মসূচিতে উপস্থিত হতেন খোকন।

 

খোকনের উপর ক্ষুব্দ নেতাকর্মীদের মতে, গত ১৫ বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। এসময় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে খুব একটা দেখা মিলেনি গোলাম ফারুক খোকনের। রূপগঞ্জ বিএনপি’র এক সিনিয়র নেতার সুপারিশে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন খোকন। সেই নেতার আশীর্বাদেই হয়েছিলেন আহ্বায়ক এবং পরবর্তীতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ন পদ।

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক রাজনৈতিক মামলা দায়ের হয়েছে, তখনো গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়নি। গোলাম ফারুক খোকনই সম্ভবত একমাত্র বিএনপি নেতা যাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়না। সরকারি দলের সাথে গোপন লিয়াজো রক্ষা করে চলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। দিনের-পর-দিন নিষ্ক্রিয় থেকেও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এখন গোলাম ফারুক খোকন- যা নেতাকর্মীদের মনে বিরাট বিষ্ময়ের জন্ম দেয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ