নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে সাবেক সাংসদ মো: গিয়াসউদ্দিনকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা মো: শাহ আলম। আর এ জন্য তিনি অধ্যাপক মামুন মাহমুদের মতো বিতর্কিত নেতাকে গিয়াসউদ্দিনের আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। মামুন মাহমুুদের পিছনে থেকে তাকে সামনে ঠেলে দিতে নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন মো: শাহ আলম। তার প্রচেষ্টায় বহু বিতর্কের জন্মদাতা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুুদ জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নেরও স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন।
সূত্রে প্রকাশ, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নির্বাচন কেন্দ্রীক হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সরকারী দল আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে তাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান আবারো এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পাচ্ছেন এটা ্এক রকম প্রায় নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে শামীম ওসমানের প্রতিপক্ষ হিসেবে কে বেশী চ্যালেঞ্জিং হতে পারেন সে নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে শামীম ওসমানকে বেকায়দায় ফেলে জয় ছিনিয়ে আনার মতো প্রার্থী কে হতে পারেন, সে নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে বিচার বিশ্লেষন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির টিকিট পেতে চেষ্টা করবেন দুই হেভিওয়েট নেতা। এরা হলেন সাাবেক সংসদ সদস্য মো: গিয়াসউদ্দিন ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। এই দুজনই এ মুহুর্তে বেশী আলোচনায় রয়েছেন। এদের মাঝে কে শামীম ওসসমানের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম তা নিয়েই বিএনপি নেতাকর্মী থেকে শুরু করে এই আসনের ভোটারদের মাঝে হচ্ছে মূল আলোচনা।
সূত্রে প্রকাশ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে এ আসনে শামীম ওসমানকে পরাজিত করার অভিজ্ঞতা। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মো: গিয়াসউদ্দিন নারায়য়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও এ নির্বাচনের কিছুদিন আগে পর্যন্ত গিয়াসউদ্দিন আওয়ামীলীগেরই প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নির্বাচনের কিছুদিন আগে বিএনপিতে যোগ দেন এবং বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।
সূত্র বলছে, ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় মো: গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন বাকিদের চেয়ে গিয়াস্উদ্দিনের রাজনৈতিক সক্ষমতা অনেক বেশি। দলীয় ভোট ছাড়াও নিরপেক্ষ অনেক মানুষের পছন্দে রয়েছেন তিনি। বিশেষ করে এ অঞ্চলে শামীম ওসমান বিরোধীদের প্রথম পছন্দ মো: গিয়াসউদ্দিন। তাদের মতে এই আসনে শামীম ওসমানকে ঠেকানোর সামর্থ রয়েছে কেবল গিয়াসউদ্দিনেরই, বাকিরা হবে ড্যামি ক্যান্ডিডেট।
তবে একই আসনে গত কয়েকটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ফতুল্লার শিল্পপতি নেতা মো: শাহ আলম। কিন্তু রাজনীতিতে ্উল্লেখযোগ্য কোনো অবদান না থাকায় তাকে বিবেচনা ককরেননি কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই তিনি বিএনপির সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তবে কাগজে কলমে পদত্যাগ করলেও ফতুল্লা-সিদ্ধিরগগঞ্জের রাজনীতির নিয়ন্ত্রন নিজের কাছে রাখতে মরিয়া এই নেতা। আর তাই এ আসনে আধিপত্য ধরে রাখতে মামুন মাহমুদকে নিজের ড্যামি হিসেবে দাঁড় করিয়ে গিয়াস ঠেকানোর চেষ্টা করছেন তিনি। যদিও মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কম নেই নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে জেলা বিএনপির অন্তর্গত বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিশাল অংকের বানিজ্যের অভিযোগ এই নেতার বিরুদ্ধে। টাকার বিনিময়ে অযোগ্য লোকদের কমিটিতে পদ দিয়েছেন মামুন মাহমুদ আর রাজপথের ত্যাগী নেতাদের করেছেন বঞ্চিত। তাছাড়া বিএনপিতে তার বিরোধী মতকে দমন করতে গিয়ে অনেক যোগ্য লোককেও তিনি মাইনাস করে দিয়েছেন।