যুবদলের কমিটিতে নিষ্ক্রিয়রা আলোচনায়!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। তাছাড়া কমিটির বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ফতুল্লা থানা বিএনপি’র সদস্য সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একই ব্যক্তি দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। তাই যেকোনো সময় জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন এখন নারায়ণগঞ্জে সর্বত্র।

এদিকে নতুন কমিটি গঠন হওয়ার গুঞ্জনে কমিটিতে পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য পদ প্রত্যাশীরা। আর এই প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন এমন কয়েকজন নেতা যাদেরকে বিগত দিনগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে দেখা মিলেনি। বিভিন্ন উপর মহলের তদবিরে তারাই এখন আলোচনায় চলে এসেছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করে, যারা অতীতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলো, তাদেরকেই যুব দলের নেতৃত্ব দেয়া হোক। নিষ্ক্রিয় কোনো নেতাকে নেতৃত্ব দেয়া হলে তৃণমূল তা কোনভাবেই মেনে নেবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা যুবদলের আসন্ন কমিটিতে আহ্বায়ক পদ পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। গত ১৫ বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। এসময় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে কখনোই দেখা মিলেনি এই নেতার। রূপগঞ্জ বিএনপি’র এক সিনিয়র নেতার সুপারিশে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন খোকন। সেই নেতার আশীর্বাদেই এখন সভাপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। অথচ কমিটি পাওয়ার পরেও যুবদলের কর্মসূচিগুলোতে তিনি থেকেছেন অনুপস্থিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক রাজনৈতিক মামলা দায়ের হয়েছে, তখনো গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়নি। তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়না। সরকারি দলের সাথে গোপন লিয়াজো রক্ষা করে চলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। দিনের-পর-দিন নিষ্ক্রিয় থেকেও যুবদলের কমিটিতে আলোচনায় এখন গোলাম ফারুক খোকন।

একইভাবে জেলা যুবদলের আহবায়ক পদ পেতে কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীশূন্য নেতা সাদেকুর রহমান সাদেক। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও সক্রিয় আন্দোলন-সংগ্রামে তাকে কখনোই দেখা যায়নি। আর তাই তার নেই নিজস্ব কোনো কর্মী বাহিনী। ওয়ান ম্যান শো এই নেতা সম্প্রতি আলোচনায় উঠে এসেছেন আড়াইহাজারের আরেক প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া আসন্ন কমিটিতে সদস্য সচিব পদ প্রত্যাশী। এ লক্ষ্যে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও জেলা যুবদলের পদ পাওয়ার পরে একটি কর্মসূচিতেও তিনি উপস্থিত থাকেন নি। শুধুমাত্র আড়াইহাজারের এক নেতার চার পাশেই থাকে সবসময় লক্ষ্য করা গেছে। গত তিন বছরে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল বিভিন্ন দাবিতে যে কর্মসূচিগুলো পালন করেছে, তার একটি কর্মসূচিতেও দেখা মিলেনি যে রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার, তিনিই এখন সদস্য সচিব পদ প্রত্যাশা করেন, যা বিস্মিত করেছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের।

এছাড়াও জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ইমন ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীবও আসন্ন কমিটিতে সদস্য সচিব পদ পাওয়ার জন্য জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও বিগত সময়ে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামগুলিতে তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। বিভিন্ন সিনিয়র নেতার আশীর্বাদপুষ্ট এসব নিষ্ক্রিয় নেতারা যুব দলের নেতৃত্ব প্রত্যাশী। যদিও তৃণমূল এদেরকে সহজভাবে নিতে নারাজ। তৃণমূল চায় কর্মী বান্ধব রাজপথের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। যাতে করে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারেন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে জাতীয়তাবাদী শক্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ