নির্বাচনের আগে ঘর গুছাতে ব্যর্থ আওয়ামীলীগ

নারায়ণগঞ্জ মেইল: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে আওয়ামীলীগের নেতারা যখন সক্রিয় হলেও উল্টো চিত্র নারায়ণগঞ্জে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ থেকে শুরু করে সহযোগী প্রতিটি সংগঠনে নতুন নেতৃত্বে সৃষ্টি হচ্ছে না। মেয়াদ উর্ত্তীণ কমিটিগুলো পুনর্গঠনে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছেন স্থানীয় আওয়মীলীগের শীর্ষ নেতাদের। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নতুন কমিটি না হওয়ায় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে পরবে বলে ধারনা রাজনীতি বিশ্লেষকদের।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন পদ-পদবী আকড়ে রেখে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। বিভিন্ন অযুহাতে দীর্ঘদিন যাবত সবগুলি কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এভনো পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পরতে পাওে বলে আশংকা তৃণমূলের।

জানাগেছে, ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয় আনোয়ার হোসেনকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে। ৭ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ দুই বছর তিন মাস পর ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের আগে মহানগর আওয়ামীলীগের গুঞ্জন উঠলেও তা বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি।

২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে পুনরায় আব্দুল হাই সভাপতি ও আবু হাসনাত শহীদ বাদল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয় । সম্মেলনের এক বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। আর নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও শীর্ষ নেতাদের মতানৈক্যের কারণে বছরের পর বছর ধরে সম্মেলন হচ্ছে না নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের। দীর্ঘ ১৮ বছরেও জেলা যুবলীগের পরিবর্তন আসেনি। জেলা আওয়ামী লীগে বিলীন হয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ। ফলে জেলা যুবলীগের নিয়ন্ত্রণাধীন উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সাংগঠনিক ভিত মুখ থুবড়ে পড়েছে।

২০০৫ সালে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা থাকা অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক পদে এডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল নির্বাচিত হন। তারা দুইজনই দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় অভিভাকহীন হয়ে পড়েছে জেলা যুবলীগ।

৩ বছরের মহানগর যুবলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ বছর আগে। ফলে নতুন কমিটি না আসায় মহানগর যুবলীগের পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা হতাশ। তাছাড়া তাদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে ২৭টি ওয়ার্ডে যুবলীগের কমিটিও নেই।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই শহরের খানপুর হাসপাতালে রোডে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়। নেতায় নেতায় কোন্দলের কারণে সেই সম্মেলনে ঘোষনা হয়নি নতুন নেতৃত্বের।

গত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান করায় মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরবর্তিতে গত ৩১ জুলাই এক বছরের জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

তবে মেয়াদহীন কমিটি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে জেলা ছাত্রলীগ। ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়েছিল। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরে। এছাড়াও মহিলা আওয়ামীলীগ, যুব মহিলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি নেই দীর্ঘ বছর ধরে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ