নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র ২ নং রেল গেইট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২০০ শতাংশ সম্পত্তি ভূমিদস্যুদের অবৈধ দখলে থাকার অভিযোগ করেছেন ফেরদৌস বারী জন নামে একজন কানাডা প্রবাসী। বাজার মূল্যে প্রায় দুইশো কোটি টাকার এই সম্পত্তি ফিরে পেতে সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের উত্তর চাষাড়া এলাকার অধিবাসী ফেরদৌস বারী জন প্রায় তিন দশক যাবত প্রবাসী জীবন যাপন করছেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তিনি কানাডার সর্বশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং অল্প কিছু ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এছাড়াও তিনি একাধারে প্রেসিডেন্ট অব কানাডিয়ান-বাংলাদেশী পাবলিক এফেয়ার্স কমিটি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলদেশ আওয়ামী লীগ কানাডা শাখা এবং লিবারেল পার্টী অব কানাডা, অশোয়া অঞ্চলের বর্তমান রাইডিং চেয়ারম্যান।
ভূমিদস্যুদের অবৈধ দখলে থাকা সম্পত্তি ফিরে পেতে কানাডা-প্রবাসী ফেরদৌস বারী সিআইডি বরাবর লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, মৌজাঃ নারায়ণগঞ্জ। খতিয়ান নং সি.এস-০৬ নং, জে.এল. নং- সি.এস ১৮৮নং, এস.এ. নং ৬৭ ও আর এস নং ৬। দাগ নং-১। সর্বমোট জমির পরিমাণ দুইশত আড়াই শতাংশ (সম্মুখ অংশ মনির হোটেল, ফুডল্যান্ড ইত্যাদি স্থাপনা, পেছনে সমগ্র রেলওয়ে মার্কেট) এর মালিকানা সংক্রান্ত।
উপরে উল্লখিত সম্পত্তির খরিদ সূত্রে মালিক আমার শশুর মরহুম মোখলসুর রহমান ওরফে পেয়ার আলী মুন্সী গতোবছর করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে ২৮শে এপ্রিল, ২০২০ তিন কন্যা রেখে মৃত্যুবরন করে। বর্তমানে আমার স্ত্রী ও তার পরিবার অজিওন বারী গং উল্লেখিত সম্পত্তির ওয়ারিশ সুত্রে মালিক। উল্লেখ্য, পেয়ার আলী মুন্সীর তিন কন্যাই বর্তমানে প্রবাসে বসবাস করছেন। জেষ্ঠ্য কন্যা অজিওন বারী কানাডা প্রবাসী, দ্বিতীয় কন্যা ফায়জুন আমিন এবং কনিষ্ঠ কন্যা নাজমুন বারী বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী। প্রায় দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে চলমান মামলা গতো বছর ২০২০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রায়ের মাধ্যমে (কপি সংযুক্ত) নিষ্পত্তি হয়। রেলওয়ের সাথে দীর্ঘ দিন মামলা চলমান থাকা কালীন সময়ে কতিপয় দখলদার ও ভূমিদস্যু উক্ত জায়গায় বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা, মার্কেট ইত্যাদি গড়ে তোলেন যাতে সর্বমোট দোকানের সংখ্যা আনুমানিক পাঁচ শতাধিক এবং বছরের পর বছর ধরে এসব স্থাপনা থেকে অবৈধ সুবিধা লাভ করে আসছে। গতো ১১ই সেপ্টেম্বরে দেশে এসে খোজ খবরের মাধ্যমে আমি জানতে পারি উক্ত অবৈধ স্থাপনার মধ্যে মনির হোটেল (মালিক জনাব মনির হোসেন), ফুডল্যান্ড বেকারী, ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্ট (মোবাইলঃ ০১৯১৬২৭৯২৬৬), শরীফ রেস্টুরেন্ট (০১৮১৮১৩৭৯৬৮), আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ, জামান এন্টারপ্রাইজ, জালাল এন্টারপ্রাইজ, আমান কালার থ্রেড, ফরিদ ষ্টোর, বাবুল ষ্টোর, ছোয়া কালার থ্রেড, এম.আর এন্টারপ্রাইজ, সবুজ এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই ষ্টোর ইত্যাদি উল্লেখ্য।
মহাদয়ের নিকট সবিনয় নিবেদন এই যে, অজিওন বারী গং এর মালিকানার উপরে উল্লেখিত এই সম্পত্তি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ ও তার উদ্ধারে জনাবের সাহায্য কামনা করছি।
ভুক্তভোগী ফেরদৌস বারী জানান, নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা বছরের পর বছর যাবৎ এ বিষয় সম্পত্তি অবৈধ ভোগ দখল করে আসছে। এখানে থাকা প্রায় ৫০০ দোকান থেকে প্রতিমাসে প্রায় এক কোটি টাকা ভাড়া আদায় করছে যা এই ভূমিদস্যুরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছেন। রেলওয়ের সাথে চলমান মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসায় আমরা এখন সম্পত্তির দখল নিতে চাই। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার রাতে আমাদের মালিকানাধীন সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে মনির হোটেলের মালিক মনির হোসেন লোকজন নিয়ে বাঁধা প্রদান করে। আমরা কোন রকম ঝামেলা করতে চাই না বিধায় সেখান থেকে চলে আসি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা চাই আইনগতভাবে প্রশাসন আমাদেরকে আমাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেবেন।