পুলিশকে টাকা দিয়ে চাষাঢ়া ঢুকে ইজিবাইক!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রোডে নিয়মিত ইজিবাইক চালান সোহেল। শহরে ইজিবাইক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিদিনই তিনি চাষাঢ়া এসে যাত্রী তুলছেন। তার মতো কয়েকশ ইজিবাইক চালক চাষাঢ়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রোডে চলাচল করছেন। প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পরেও কিভাবে শহরে ঢুকেন জানতে চাইলে সোহেল বলেন, ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিয়ে ঢুকতে হয়। দুই শিফটে ৫০ টাকা করে মোট ১০০ টাকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করেন তারা।

সোহেলের মতো একই রুটে ইজিবাইক চালান নজরুল। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেয়ে ক্ষোভের সঙ্গে নজরুল বলেন, এক সাংবাদিককে মাসে ১২০০ টাকা দিতাম। এতে করে শহরে ঢুকলে পুলিশের হাত থেকে তিনি রক্ষা করবেন বলেছিলেন কিন্তু কয়েকদিন আগে আমার অটো (ইজিবাইক) পুলিশে আটক করে নিয়ে যায়। সেই সাংবাদিককে ফোন দেওয়ার পরেও ছাড়েনি। পরে ২৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ছুটে আসতে হয়েছে। এই রোডের বেশীরভাগ অটোই কোনো না কোনো সাংবাদিকের অধীনেই চলাচল করে। পুলিশ আর সাংবাদিক মিলে আমাদের কষ্টের টাকাগুলি লুটেপুটে খাচ্ছে।

এরকম শতশত গল্প চাষাঢ়ার ইজিবাইক চালকদের। প্রশাসন নারায়ণগঞ্জ শহরে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তাদের নাকের ডগা দিয়েই সারাদিন অবাধে চলছে এই অবৈধ যানটি। চাষাঢ়ার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সুগন্ধা বেকারীর সামনে রীতিমত ষ্ট্যান্ড বানিয়ে বসেছে তারা। এখান থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রী পরিবহন করছে নিষিদ্ধ ইজিবাইক যা অটো নামে পরিচিত। শহরে নিত্য যানজটের অন্যতম প্রধান কারনও এই ইজিবাইক। সড়কের বিভিন্ন স্থানে যাত্রী উঠানামা করানোর ফলে ব্যস্ত এই সড়কে প্রদিনিই যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে এ পথে চলাচলরত জনসাধারনকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে খানপুর হাসপাতাল পর্যন্ত ইজিবাইক চলাচল করার কথা থাকলেও তা নির্বিঘ্নে ঢুকে পরছে শহরে। আর এ কাজে তাদের সহায়তা করছে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা নিয়ে অবৈধ ইজিবাইককে শহরে প্রবেশাধীকার দিচ্ছেন এই অসাধু পুলিশ সদস্যরা। তাদের এই কাজে সহযোগী হিসেবে রয়েছে শহরের কয়েকজন কথিত সাংবাদিক যারা পুলিশের সাথে চালকদের মধ্যস্ততা করিয়ে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব চাঁদাবাজ ট্রাফিক পুলিশ ও নামধারী সাংবাদিকের হাত থেকে নিস্তার চান ইজিবাইক চালকরা আর শহরবাসী চান একটি পরিচ্ছন্ন চলাচল উপযোগী নগরী।

ইজিবাইক থেকে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আ: করিম টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান। সেইসাথে শহরে কোন ইজিবাইক ঢুকতে দেয়া হয়না এবং যারা ঢুকে তারা পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চুরি করে মাঝেমধ্যে ঢুকে পরে বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ