যুবদলে কমিটি বানিজ্য, রাজপথের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সদ্য ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আংশিক কমিটি নিয়ে তৃনমূলের ক্ষোভ আর হতাশা বেড়েই চলেছে। রাজপথের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কিং মেকারদের পকেট কমিটি গঠন হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পরছে যুবদলের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেও কমিটি বানিজ্যের কারনে পদবঞ্চিত এসব নেতাকর্মীরা তাই কমিটি পূনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, গত কিছুদিন পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তিনজনের একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে গোলাম ফারুক খোকনকে এবং সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে ভিপি কবীরকে। আর এ দুজনকে নিয়েই নেতাকর্মীদের যতো ক্ষোভ। রূপগঞ্জ এবং আড়াইহাজারের দুইজন শীর্ষ বিএনপি নেতার কমিটি বানিজ্যের কারনে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম না করেও খোকন আর ভিপি কবীরের মতো লোক জেলা যুবদলের শীর্ষ পদে চলে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

তৃণমূলের মতে, গত ১৫ বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। এসময় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে খুব একটা দেখা মিলেনি গোলাম ফারুক খোকনের। রূপগঞ্জ বিএনপি’র এক সিনিয়র নেতার সুপারিশে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন খোকন। সেই নেতার আশীর্বাদেই এখন আহ্বায়ক হয়েছেন তিনি। অথচ কমিটি পাওয়ার পরেও যুবদলের কর্মসূচিগুলোতে তিনি থেকেছেন অনুপস্থিত।

ক্ষুব্ধ যুবদল নেতাকর্মীরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক রাজনৈতিক মামলা দায়ের হয়েছে, তখনো গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়নি। গোলাম ফারুক খোকনই সম্ভবত একমাত্র বিএনপি নেতা যাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়না। সরকারি দলের সাথে গোপন লিয়াজো রক্ষা করে চলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। দিনের-পর-দিন নিষ্ক্রিয় থেকেও যুবদলের কমিটিতে আহ্বায়ক এখন গোলাম ফারুক খোকন- যা নেতা-কর্মীদেরকে হতাশ করেছে।

অপরদিকে জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে আড়াইহাজারের ভিপি কবিরকে। এই ভিপি কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই আড়াইহাজারে। বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যবহার করলেও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথেই তার সখ্যতা বেশী। এমনকি আওয়ামীলীগের পক্ষে ভোট প্রার্থনার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু স্থানীয় এক কিং মেকারকে বিপুল অংকের টাকা দিয়ে অখ্যাত এই কবীর উঠে এসেছেন জেলা যুবদলের নেতৃত্বে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর শহিদুল ইসলাম টিটুকে সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকনকে (সাবেক মুরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান) সাধারণ সম্পাদক এবং সোনারগাঁয়ের সহিদুর রহমান স্বপনকে ১ম যুগ্ম সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করেছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব এবং সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

কমিটিতে অন্যান্যরা হলেন সহ সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত, সহ সভাপতি এ কে এম আমিরুল ইসলাম ইমন, সহ সভাপতি হারুন অর রশিদ মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূইয়া, সাংগঠিনক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন।

আংশিক কমিটি ঘোষনার প্রায় ৬ মাস পরে ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ ২০১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুল আলম নিরব এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।

গত ১৬ মার্চ টিটু-খোকনের কমিটি বিলুপ্ত করে তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ