নারায়ণগঞ্জ মেইল: গতবারের মতো এবারও দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা পাওয়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যেমন কুতুবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা দেয়া হয়েছে বিএনপি’র বহিস্কৃত নেতা মনিরুল আলম সেন্টুকে। তেমনি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে আলীরটেক থেকে জাকির হোসেনের নৌকা পাওয়ার বিষয়টিও। আলীরটেকবাসীর প্রশ্ন- জাকির হোসেন কবে আওয়ামী লীগ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার লড়াইয়ে ছিলেন তিনজন। এদের মধ্যে দুইজন সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ও জাকির হোসেন এবং তরুণ উদীয়মান সমাজসেবক সায়েম আহমেদ। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনজনের মধ্যে সায়েম আহমেদের উপস্থিতি ছিল ঈর্ষণীয়ভাবে বেশি। মতিউর রহমান মতি মাঝেমধ্যে দু’একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও জাকির হোসেনকে কখনো আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। তিনি নিজেকে কখনো আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচয়ও দেননি।
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিশাল শোডাউন করে লোকজন নিয়ে উপস্থিত থাকতেন সায়েম আহমেদ। নিজেও এলাকায় এবং এলাকার বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। সায়েমের অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের ঢল নামতো। লোকে লোকারণ্য হয়ে যেতো অনুষ্ঠানস্থল। আওয়ামী লীগের ব্যানারে অসংখ্য অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন সায়েম। তাই আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার প্রধান দাবিদার ছিলেন তিনি। আলীরটেকবাসীও ধরেই নিয়েছিলেন নৌকা পাচ্ছেন সায়েম।
অপরদিকে সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন কোনদিনই আওয়ামী লীগ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো সভা-সমাবেশে তাকে কখনো দেখা যায়নি বরং সরকারবিরোধীদের সাথে তাকে প্রায়ই দেখা গেছে। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সাথে তার ছিল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এবং অদৃশ্য শক্তির ইশারায় কোনদিন আওয়ামী লীগ না করেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা বাগিয়ে নিয়েছেন জাকির হোসেন। যা আলীরটেকবাসী কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। বিশেষ করে আলীরটেকের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধীর হাতে নৌকা প্রতীক কোনোভাবেই মানতে পারছেন না।
প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর। এছাড়া মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ অক্টোবর, বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি ২৪ ও ২৫ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৬ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।