নারায়ণগঞ্জ মেইল: গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের আগ থেকে ক্রমাগত মামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ পর্যন্ত সাত থানায় বারোটি মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএনপির ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে আর গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক। এসব মামলার চাপে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে ওয়ার্ডের কর্মী পর্যন্ত। এতোসব মামলা আর হয়রানির পরেও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোবল হারায়নি বরং সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়াই করার অঙ্গিকার তাদের কন্ঠে।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। সেই মহাসমাবেশকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং প্রতিটি অঙ্গ সংগঠন পূর্ন প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের আগ থেকেই নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে পুলিশী অভিযান শুরু হয়। নেতাকর্মীরা তখন লুকিয়ে ঢাকা চলে যান কিন্তু ঢাকার মহাসমাবেশে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং পরদিন সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় দলটি। ২৯ তারিখ হরতালের পর টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচির পালন করে তারা। এসব কর্মসূচি পালনকালে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অনেকে, গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় ১২টি নাশকতার মামলা দায়ের করে।
পুলিশের দায়ের করা এসব মামলায় প্রায় ছয় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো: গিয়াসউদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু থেকে শুরু করে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ প্রায় সকল সক্রিয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। এসব মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজিবসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। বাকিরাও গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন।
এদিকে মামলায় হামলায় বিপর্যস্ত হলেও মনেবলে এখনো তাজা রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীরা সক্রিয় প্রতিবাদের মাধ্যমে নিজেদের ধৈর্য আর আস্থায় অবিচল থেকে সরকার পতনের আন্দোলনে সোচ্চার থাকার জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করছেন, অনুপ্রেনা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন, মামলা হামলা জেল জুলুমের ভয় তারা আর করেন না।