কে হচ্ছেন জেলা বিএনপি’র কান্ডারী

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির হাল ধরবেন কে, কে হচ্ছেন কান্ডারি-এই প্রশ্ন এখখন নেতাকর্মৃীদের মুখে মুখে। থানা কমিটির সম্মেলন শেষ করে জেলার সম্মেলন আায়োজন এবং নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রকৃয়া যতই বিলম্বিত হচ্ছে, নেতাকর্মীদের মাঝে কৌতুহল ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এ মুহুর্তে জেলা বিএনপির সভাাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সাংসদ মো: গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বর্তমান আহবায়ক মনিরুল ইসললাম রবি, সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ও যুগ্ম আহবায়য়ক আবদুল হাই রাজু। এদের মাঝ থেকেই যে কোনো একজন দাায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তা এক প্রককার নিশ্চিত।

জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: গিয়াসউদ্দিন ছিলেন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মো: গিয়াসউদ্দিন নারায়য়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও এ নির্বাচনের কিছুদিন আগে পর্যন্ত গিয়াসউদ্দিন আওয়ামীলীগেরই প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নির্বাচনের কিছুদিন আগে বিএনপিতে যোগ দেন এবং বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।

সূত্র বলছে, ব্এিনপিতে যোগ দিয়ে শামীম ওসমানকে হারিয়ে এমপি হওয়া গিয়াসউদ্দিনকে নিয়েও বিতর্ক রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গণে। তিনি এমপি হওয়ার পরে অনেক ত্যাগী বিএনপি নেতাকে কোনঠাসা করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশেষ করে তৎকালীন ডাকসাইটে যুবদল নেতা মমিনুল্লাহ ডেভিড ও তৈমূর আলম খন্দকারের ছোট ভাই সাব্বির আলম খন্দকারের হত্যার পিছনে গিয়াসউদ্দিনের হাত রয়েছে বলে মনে করেন অনেক বর্ষীয়ান বিএনপি নেতা। তাছাড়া দল ক্ষমতা ছাড়ার পরে গিয়াসউদ্দিন নিজেকে খোলসের ভিতরে ঢুকিয়ে ফেলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে এককবারেই অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে পুলিশের হামলা মামলায় দিশেহারা অবস্থা অথচ এ সময়টাতে মিটিং মিছিলে খুব একটা দেখা মিলেনি সাবেক এ্ই সংসদ সদস্যকে। তবে এতো কিছুর পরেও ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় মো: গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিএনপির নেতাকর্মীরা মেেন করেন বাকিদের চেয়ে গিয়াস্উদ্দিনের রাজনৈতিক সক্ষমতা অনেক বেশি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান আববারো রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি জেলা ব্এিনপির হাল ধরবেন এবং নতুন করে ঘুরে দাড়াতে জেলা বিএনপিকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবেন বলে আশাবাদি কাজী মনির অনুসারীরা। যদিও তার বিগত দিনের পারফর্মেন্স খুব একটা সুখকর নয়। তার সময়ে জেলা বিএনপিতে দ্বন্দ্¦ আর কোন্দল ব্যাপক আকার ধারন করেছিলো। সে সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের নামে ফটোসেশনের রীতি চালু করেছিলেন এই কাজী মনির। তাছাড়া তৃণমূূল নেতাকর্র্মীদের সাথে তার খুুব একটা যোগাযোগ না থাকায় আবারো তাকে জেলা বিএননপির সভাপতি পদে দেখতে নেতাকর্মীদের অনীহা রয়েছে।

জেলা বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অআহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবির নামও রয়েছে এই তালিকায়। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত এই নেতা জেলা বিএনপির হাল ধরলে তৃণমূল আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে জেলা বিএনপির আহবায়ক পদ থেকে এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে বহিস্কার করার পরে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হিসেবে মনিরুুল ্ইসলাম রবির নৈপূন্য নজর কেড়েছে সকলের। তাই জেলা বিএনপির হাল ধরতে মনিরুল ইসলাম রবির নাম প্রথম সারিতেই থাকছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি পদে এবার সবচেয়ে বেশী আলোচিত নাম অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য সচিব এই শিক্ষাবীদ নেতা আগামী জেলা বিএনপির সভাাপতি হতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে গত কয়েক বছরের সরকার বিরোধী আন্দোলনে মামুন মাহমুদের ছিলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মিটিং মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের হামলা মামলার শিকার হতে হয়েছে তাকে অনেকবার, জেলও খেটেছেন বহুদিন। তাই জেলা বিএনপির সভাপতি পদে তার নামটা বেশ জোরেশোর্ইে আলোচিত হচ্ছে। তবে মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগও কম নেই নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে জেলা বিএনপির অন্তর্গত বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিশাল অংকের বানিজ্যের অভিযোগ এই নেতার বিরুদ্ধে। টাকার বিনিময়ে অযোগ্য লোকদের কমিটিতে পদ দিয়েছেন মামুন মাহমুদ আর রাজপথের ত্যাগী নেতাদের করেছেন বঞ্চিত। তাছাড়া বিএনপিতে তার বিরোধী মতকে দমন করতে গিয়ে অনেক যোগ্য লোককেও তিনি মাইনাস করে দিয়েছেন। তাই বিএনপির তার জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বিতর্কেরও শেষ নেই।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবদুল হাই রাজু নারায়ণগঞ্জে একজন ক্লিনম্যান ইমেজের রাজনীতিবীদ হিসেবে সর্র্বমহলে পরিচিত। বিএনপির সূচনালগ্ন থেকে দলটির সাথে জড়িত তিনি। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু হয় তার পথচলা। ধীরে ধীরে রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় আজ তিনি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলো তার সরব উপস্থিতি। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সরকার বিরোধী আন্দোলনে জোড়ালো ভুমিকা রাখতে তাই আবদুল হাই রাজুকে জেলা বিএনপির সভাপতি পদে এগিয়ে রাখছেন নেতাকর্মীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ