তৈমূরের মঞ্চে জাতীয় পার্টির নেতা, ক্ষুব্দ তৃণমূল!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার। মঙ্গলবার ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে তৈমূরের নিজ বাসভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তৈমূরের সঙ্গে বসেছিলেন সোনারগাঁ জাতীয় পার্টির নেতা রাজু আহমেদ রমজান যিনি কিনা গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের মঞ্চে জাতীয় পার্টির নেতাকে দেখে তৈমূরের প্রতি ক্ষোভ আর নিন্দা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। রাজপথে দিনের পর দিন আন্দোলন সংগ্রাম করে আর জেল জুলুম হুলিয়া সহ্য করার পরেও তৈমূরের কাছে মূল্যায়ন পাওয়া যায় না অথচ টাকার জোরে সরকারী দলের দালালরা আজ তৈমূরের কাছের মানুষ হয়ে যাচ্ছে- এমনটাই জানিয়েছেন ক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা।


জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালে সংগঠনের সকল চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এড. তৈমূর আলম খন্দকার। যখন যার কাছ থেকে সুবিধা পেতেন তাকেই পদ পদবী দিয়ে দিতেন আবার কারো কাছ থেকে কাঙ্খিত কিছু না পেলে তার কাছ থেকে কেড়েও নিয়েছেন তিনি। সংগঠন কিংবা গঠনতন্ত্রের কোন তোয়াক্কাই তিনি করতেন না । নিজের ইচ্ছে মতো দল চালাতেন এই সুবিধাবাদী নেতা। সে থেকে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষত এখানো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে নেতাকর্মীদের।


সূত্র জানায়, এড. তৈমূর আলম খন্দকার বেশ কয়েক বছর যাবত নারায়ণগঞ্জ জেলার রাজনীতি ছেড়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য তিনি। তাছাড়া পেশায় আইনজীবী তৈমূর ওকালতিও করেন ঢাকায়। মাঝে মধ্যে আসেন নারায়ণগঞ্জে। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তৈমূর। তাছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালীন নানা অনিয়মের কারনে নেতাকর্মীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তৈমূরের দিক থেকে।


এদিকে তৈমূরের জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার খবরে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া। কারন সাবেক সভাপতি থাকাকালে ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি তৈমূরের অবহেলা আর অবমূল্যায়নের কথা তারা এখনো ভুলে যাননি। তাছাড়া তৈমূর জেলার সভাপতি হওয়া মানে আবারো ‘হাদিয়ার বাক্স’ খুলে যাওয়া এবং বিভিন্ন পদ পদবী তখন হাদিয়ার পরিমানের উপর নির্ভর করবে বলে অভিমত পুরানো নেতাকর্মীদের। ইতিপূর্বেও তৈমূর একই পদ একাধীকজনকে দিয়েছেন হাদিয়ার বিনিময়ে, আবার অনেককে করেছেন পদচ্যুত।


তৈমূরের অতীত দিনের কর্মকান্ডের প্রতিফলন আবারো স্পষ্ট হয়ে উঠছে তার সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে। টাকার জন্যে বিএনপির অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির নেতাকে এনে মঞ্চে বসাচ্ছেন তিনি আর ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুরে ঠেলে দিচ্ছেন। তাই তৈমূরের মতো লোভী স্বার্থপর নেতাকে জেলা বিএনপির দায়িত্বে দেখতে নারাজ দলের তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তানাহলে অনুপ্রবেশকারীদের দখলে চলে যাবে বিএনপি- এমনটাই আশংকা তৃণমূলের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ