নারায়ণগঞ্জ মেইল : নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক বিতর্কিত নেতা গোলাম ফারুক খোকনকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাইকে নাম ঘোষণা করছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না খোকনকে। এদিকে সঞ্চালক বারবার খোকনের নাম ঘোষণা করেই যাচ্ছেন। একপর্যায়ে সঞ্চালক টিপু মাইকে বলেই ফেললেন “খোকন কি চলে গেলো”। নেতাকর্মীরা বললেন হ্যাঁ তিনি চলে গেছেন এমনই এক ঘটনার অবতারণা হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা ও মহানগর বিএনপি’র প্রতিবাদ সভায়।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী কটুক্তি করায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
বিএনপি’র প্রতিবাদ সমাবেশে মিছিল নিয়ে যোগ দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন আহবায়ক গোলাম ফারুক খোকন এবং সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন খোকন এবং মঞ্চে আসন গ্রহণ করে নিজস্ব কিছু লোককে বলেন ছবি তুলতে। ফটোসেশন শেষ করে কাউকে কিছু না বলেই গোঁপনে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন যুবদলের বিতর্কিত আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকন কিন্তু এ ঘটনা জানা ছিলনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের। তিনি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা যুবদলের সভাপতির নাম ঘোষণা করতেই থাকেন কিন্তু তার আর দেখা মিলে না। পরবর্তীতে জানতে পারেন ফটোসেশনের জন্য এসেছিলেন খোকন এবং ছবি তোলা শেষ হলে সটকে পড়েন তিনি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। এসময় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে কখনোই দেখা মিলেনি এই গোলাম ফারুক খোকনের। রূপগঞ্জ বিএনপি’র এক সিনিয়র নেতার সুপারিশে জেলা যুবদলের বিগত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন খোকন। সেই নেতার আশীর্বাদেই এখন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হয়েছেন তিনি। অথচ বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে যুবদলের কর্মসূচিগুলোতে তিনি থেকেছেন অনুপস্থিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক রাজনৈতিক মামলা দায়ের হয়েছে, তখনো গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়নি। তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়না। সরকারি দলের সাথে গোপন লিয়াজো রক্ষা করে চলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। দিনের-পর-দিন নিষ্ক্রিয় থেকেও যুবদলের নেতৃত্বে এখন গোলাম ফারুক খোকন- এটাই এখন নেতাকর্মীদের কাছে এক বিরাট বিস্ময়।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সদস্য মাশুকুল ইসলাম রাজিব, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম টিটু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকন, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ।