নারায়ণগঞ্জ মেইল: একটানা ১৩ বছর ক্ষমতার চেয়ারে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। সারাদেশে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক কাঠামো বেশ মজবুত হলেও গ্রুপিং রাজনীতির ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগে। যে কারনে এখানকার সাংগঠনিক ভিত বেশ নড়বড়ে। জেলা কিংবা মহানগর, দুই কমিটিতেই স্পষ্ট শীর্ষ নেতাদের বিভাজন। এতে করে বিভক্ত এ জেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতি।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জ। বলা হয়ে থাকে ক্ষমতাসীণ দলটির জন্মও হয়েছে এই নারায়ণগঞ্জে। ইতিহাসে বর্র্ণিত রয়েছে, জন্মলগ্ন থেকে অদ্যাবদি দলটির যতো আন্দোলন সংগ্রাম, তার উৎপত্তি হয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে। পরবর্তীতে যা সারাদেশে আন্দোলনের জোয়ার তুলেছে। এই কারণে নারায়ণগঞ্জকে রাজনীতির আতুড়ঘর হিসেবে দাবী করা হয়ে থাকে। তবে সাংগঠনিক ভাবে দলটি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চাইতে ভালো অবস্থানে থাকলেও দলীয় কোন্দল দলটির ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে তৃণমূলকে শঙ্কিত করে তুলছে।
নারায়ণগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩টিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি। এরা হলেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে গাজী গোলাম দস্তগীর (বীর প্রতীক), নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম বাবু এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জেলার প্রভাবশালী নেতা একেএম শামীম ওসমান। তিনজনেই স্ব স্ব আসনে বেশ প্রভাবশালী। নিজেদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে ওই সংসদীয় আসনগুলোতে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের কমিটি গুলোকে একক নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন তারা। এর মধ্যে আড়াইহাজার আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো পরিচালিত হয় সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর ইশারায়। একই সাথে রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রতিটি লীগেই রয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের দাপট। তবে এদের দুজনকে ছাপিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছে এমন কিছু নেতাকর্মী, যারা সকলেই প্রভাবশালী নেতা একেএম শামীম ওসমানের পরিক্ষিত ও অত্যন্ত আস্থাভাজন কর্মী।
এদিকে তিন সাংসদের বাইরেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে কিছুটা আধিপত্য রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দুইবারের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর। ফলে ৩ এমপি ও মেয়র, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে এই ৪টি শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগকে। এতে করে এ জেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন গ্রুপিং রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি নেতাকর্মী এদের কারো না কারো অনুগামী হিসেবে রাজনীতি করে যাচ্ছে।