নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নবীনরা রাজনীতির মাঠে পিছিয়ে পড়ছে। রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থেকেও পদ-পদবী না থাকায় নবীনদের রাজনীতিতে ভাটা পড়েছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগসহ সহযোগী প্রায় প্রতিটি সংগঠনের কমিটির মেয়াদ উর্ত্তীণ হলেও নতুন কমিটি গঠনে উদ্যোগ না থাকায় নবীন নেতারা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। তারমধ্যে সম্প্রতি সহযোগী একাধিক সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কমিটিতে থাকা নেতারাও নতুন করে পদ পাওয়ার বিষয়টিও এখন অনিশ্চত।
রাজনীতিতে সবসময় নবীনদের সুযোগ দেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবিক অর্থে সেটা খুব কম সময়ই কার্যকর হয়ে থাকে। নবীনদের সুযোগ না দিয়ে প্রবীণ নেতারাই বার বার তাদের পদ পদবী আকড়ে ধরে পড়ে থাকেন। প্রবীণ নেতারাই নবীনদের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। আগামী দিনেও যেসকল সম্মেলন হবে সেগুলোতেও প্রবীনদেরই থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে দিন দিন নবীনদের রাজনীতিতে সম্ভবনা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি নতুন নেতৃত্বও তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। গত ইউনিয়ন ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা রাজনীতির মাঠে উজ্জীবিত হলেও নির্বাচনের পর এখন নিশ্চুপ রয়েছেন। অথচ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে শক্তিশালী করতে বিএনপির কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হচ্ছে। সেদিক দিয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ।
সূত্র বলছে, আওয়ামীলীগ দীর্ঘ মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় থাকার পরেও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের থানা কমিটিগুলোতে গতি ফিরছিল না। একের পর এক দলীয় কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই তাদের দিনকাল অতিবাহিত হয়ে আসছিল। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ আগের করা কমিটি দিয়ে চলে আসছিল থানা কমিটিগুলোর কার্যক্রম। দেড় বছর আগে থানা পর্যায়ের কমিটিগুলো গঠন করা হলেও নতুন নেতৃত্ব তৈরী হয়নি। দীর্ঘদিন যারা পদ-পদবী দখল করে ছিলেন তারাই সেই কমিটির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। সক্রিয় নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে জানাগেছে, নারায়নগঞ্জের রাজনীতিতে তরুন নেতাদের প্রধান্য দেয়ার ব্যাপারটি আগেও ছিল, কিন্তু বর্তমানে অনেক কম। রাজনীতিতে প্রবীনদের পাশাপাশি নবীনদের বিচরণ রাজনীতিকে আরো গতিশীল করবে এবং নতুনরাও রাজনীতিতে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
এদিকে, নবীন নেতাদের পাশাপাশি তরুন নেতাদের রাজনীতিতে আনতে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে দলের তৃনমূলেও রয়েছে নানা তাগিদ। তবে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবীন নেতাদের পাশাপাশি নবীন নেতাদের প্রতি গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে কেউ চিন্তিত নন। অন্যদিকে, রাজনীতিতে দিনে দিনে বিতর্কীত নেতাদের গুরুত্ব কমতে শুরু করেছে। দলের নিস্ক্রীয় ও বিতর্কীত নেতাদের কারণে রাজনৈতিক দলগুলো সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোতে বিতর্কীত ও নিস্ক্রীয় নেতাদের বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানাগেছে। নতুন করে কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানাতে ৫০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের নিদের্শ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। যদিও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন দাবী করেছেন, শামীম ওসমান যে কমিটি গঠনের কথা বলেছেন সেই কমিটির সাথে আওয়ামীলীগের কোন সম্পর্ক নেই।