শীতলক্ষ্যা যেনো মরণ ফাঁদ!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী এখন মরণ ফাঁদে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে লাখ লাখ মানুষ পারাপার হচ্ছে। বিভিন্ন সময় নৌ দূর্ঘটনা ঘটলেও দূর্ঘটনা রোধে নিশ্চুপ ভূমিকায় দেখা গেছে নৌ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। সর্বশেষ ২০ মার্চ দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার আল-আমিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় ফের মুন্সিগঞ্জগামী এমএল আফসারউদ্দিন নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। এরআগে গত বছরের ৮ জুলাই এক কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছিল। এতে নারী ও শিশুসহ ৩৪ জনের প্রাণহানি হয়।

সূত্র বলছে, ২০১১ সালে মদিনা আলো এক্সপ্রেস লঞ্চকে নারায়ণগঞ্জ কয়লাঘাট এলাকায় মিনি ট্যাংকার ধাক্কায় ডুবে যায়। ২০১৩ সালে এম.এল. সারস লঞ্চকে চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় বালুর বাল্কহেড ধাক্কায় ডুবে যায়। ২০২১ সালে ৪ঠা এপ্রিল এস.কে.এল-৩ মাল বাহী জাহাজ শীতলক্ষ্যা ব্রীজের নিকট সাবিত আল-হাসান লঞ্চকে পিছন থেকে ধাক্কা দিলে তা ডুবে যায়। এম.ভি. শরিয়তপুর লঞ্চকে ৬/৭ বছর পূর্বে মালবাহী কোস্টার ষাটনল ঘাটের পশ্চিম পাড়ে ধাক্কা দিলে তা ডুবে যায়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত শীতলক্ষ্যায় ছোটখাটো নৌ-দুর্ঘটনা ঘটছে।

এদিকে নৌযান দূর্ঘটনা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ম্যানেজ হওয়ার জন্য মামলা দেয় বিআইডব্লিউটিএ এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেছেন, এ পর্যন্ত আমরা পাঁচটি ঘটনার সম্মূখীণ হয়েছি। যখনি একটি দূর্ঘটনা হয়, তখনি গিয়ে বিআইডব্লিউটিএ সবার আগে মামলা করে। ডিজি শিপিং, নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড এবং জেলা পুলিশ, থানা পুলিশ কেউ কিছু না করলেও তারা মামলা করে। আমি বলবো এটাকে বিআইডব্লিউটিএ’র ম্যানেজের মামলা। ২১ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চঘাটে সংগঠনের কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মামলা হলে স্টাফ, ড্রাইভার নাম যেমন আসবে। মালিকের নামও আসবে। তারা প্রত্যেকটি মামলা মালিকের নাম বাদ দিয়ে মামলা করেছে। আমরা বার বার বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। উপরোন্ত যারে ধাক্কা দিয়ে মারলো তার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দরকে আলাদা করে করে রেখেছে শীতলক্ষ্যা নদী। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ শীতলক্ষ্যা নদী পারাপার হতে হয়। শীতলক্ষ্যায় নৌযান চলাচলে শৃঙ্খলা না থাকায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। শীতলক্ষ্যা নদীতে বেপরোয়া গতিতে তিন-চার সারিতে বাল্কহেড (বালু বহনকারী বড় ট্রলার) চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে। আতঙ্কে থাকেন ইঞ্জিনচালিত সাধারণ ট্রলার ও নৌকার মাঝি-যাত্রীরা। বাল্কহেডের চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে নৌ পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি সাধারণ মানুষের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ