ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে রহস্যজনক অভিযান, পুলিশের অস্বীকার

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মেয়র প্রার্থী ডা সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে সদ্য বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে পুলিশি অভিযানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) এবং পুলিশ বাহিনী যৌথ অভিযান চালায় বলে অভিযোগে জানানো হয়।

তবে এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান।

ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ অভিযোগ করে বলেন, শনিবার রাত দশটায় মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকায় সদ্য পদচ্যুত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সরকারি তোলারাম কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদ (৩০) এর নিজ বাড়িতে ১০ থেকে ১৫ গাড়ি প্রশাসনের লোক অবস্থান নেয়।

এ সময় তারা রিয়াদকে খোঁজ করতে গেলে সামনে পড়েন রিয়াদের ভাইয়ের ছেলে সিয়াম (২২)। রিয়াদের বিষয়ে খোঁজ করলে সিয়াম বলেন তিনি (রিয়াদ) বাড়িতে নেই। পরে ডিবির পোশাক পরিহিত পাঁচ থেকে ছয় জন তাকে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে সদ্য পদচ্যুত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আজকে দুপুরে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা এসেছেন। তাদেরকে নিয়ে ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণার জন্য মতবিনিময় সভা করেছি। সভা চলাকালীন সময়ে জানতে পারলাম, ছাত্রলীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরেও আমরা সভা পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে আমার বাসায় ডিবি, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর ১৫ গাড়ি প্রশাসনের লোকজন এসেছে। এবং তারা এসে বলেছে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণা করার জন্য। এবং তারা প্রচারণা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

রিয়াদ বলেন, আমি ছাত্রলীগ করি, মহানগরের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যেহেতু ছাত্রলীগ করি সেতু স্বাভাবিকভাবেই আমি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব। জনো নেত্রী শেখ হাসিনা যে মার্কা দিয়েছেন তার পক্ষে কাজ করব। আজকে সকালেও সভা করেছি, আগামীকাল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসার কথা। একটি বড় আয়োজন এর চিন্তা ছিল। ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মেয়র আইভীর পক্ষে ভোট চাইতে প্রচারণা চালাবে। কিন্তু আজ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হঠাৎ কমিটি বিলুপ্ত করায়, বিষয়টি স্থবির হয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রশাসনের এমন হানা দেওয়াতে আমার পরিবার সহ এলাকাবাসী আতঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি তোলারাম কলেজের ভিপি তার বাসায় কেন হঠাৎ করে ১৫ গাড়ি প্রশাসন নিয়ে হানা দেওয়া হয় আমার জানা নাই। আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা এমনিতেই মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ করছি। আমরা যদি ফোরাম করে থাকি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কোভিদ নানক, মির্জা আজম, খোকন সাহা, আনোয়ার হোসেন সনোলজি নেতাকর্মীরা আছে তাদের কাছে জবাবদিহিতা করব। আমরা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নাম পার্টি অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু এর মধ্যে প্রশাসন দ্বারা হয়রানি করলে নৌকার ভোট বাড়বে না কমবে আমার জানা নেই।

রিয়াদ বলেন, আমি বহুদিন ধরে ছাত্রলীগ করি, তাই জেলায় ছাত্রলীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব প্রদানকারী হিসেবে সবাই আমাকে চিনে এবং জানে। আমি ঠিক আসলে বুঝতে পারছি না তারা কেন এ কাজটি করলো। সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে তারা যদি এমন করে, তবে মানুষ আতঙ্কিত হবে ও কষ্ট পাবে। নির্বাচনে যারা সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের যদি এই অবস্থা হয় তবে সাধারণের কি হবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ