সদর উপজেলায় কি করবেন শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ মেইল: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই দেশে বইতে শুরু করেছে উপজেলা নির্বাচনের আমেজ। সারাদেশে এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৪ থেকে ২৫ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট হবে আগামী ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপ ১১ মে, তৃতীয় ধাপ ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে। ৪ মে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন।


জানা যায়, দীর্ঘ ১৫ বছর নির্বাচন নেই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায়। এবারেও হবে তেমন কোনো নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। সীমানা সম্পর্কিত জটিলতায় আদালতে একটি রিট আবেদন থাকায় সারা দেশে উপজেলা নির্বাচন হলেও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় তা হয়না ১৫ বছর হয়ে গেছে। এই জটিলতার নিরসন করে নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগও কেউ নেয় না। যার ফলে গত ১৫ বছর যাবত বিএনপি নেতা এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিএনপি নেতাকে চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের পছন্দ না হলেও তাদেরকে মেনে নিতে হচ্ছে।


এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের সদিচ্ছার অভাবেই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হচ্ছে না বলে মনে করেন স্থানীয়রা। কারন নির্বাচন আয়োজন করলেই আওয়ামীলীগ থেকে এই পদে একজনকে মনোনয়ন দিতে হবে। আর এই মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় রয়েছেন শামীম ওসমানের দুই আস্থাভাজন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল। এদের যে কোনো একজনকে মনোনয়ন দেয়া হলে অন্যজনের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে এই শঙ্কায় বিএনপির আজাদ বিশ^াসেই আস্থা রাখেন শামীম ওসমান। আর এ কারনেই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন আলোর মুখ দেখেনা বলেই মনে করেন সদর উপজেলাবাসী। এবারো কি আজাদ বিশ^াসেই আস্থা রাখবেন নাকি নতুন কাউকে সদর উপজেলায় দেখা যাবে তা নির্ভর করছে সাংসদ শামীম ওসমানের সিদ্ধান্তের উপর। তাই ওমরাহ্ পালন শেষে দেশে ফিরে শামীম ওসমান কি সিদ্ধান্ত নেন সেটার দিকেই তাকিয়ে আছে সংশ্লিষ্ট সবাই।


জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সময় বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হলে সদর উপজেলার কিছু অংশ সিটি কর্পোরেশনে চলে যায়।


এদিকে সদর উপজেলার কিছু এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ায় ওই সব এলাকা বাদ দিয়ে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ (২০০৯ সনের ৩০ জুন সংশোধিত) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সদর উপজেলা পুর্নগঠন করে। ২০১৪ সালের ৪ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ গেজেট অনুযায়ী কয়েকটি এলাকা বাদ দিয়ে উপজেলার নতুন সীমানা নির্ধারণ হওয়ায় উচ্চ আদালতে একটি রিট করা হয়। যার পিটিশন নং-৩০৮৯। এ রিট করেন ফতুল্লা চৌধুরী বাড়ির মৃত সুলতান বক্স চৌধুরীর ছেলে মো. আসাদউদ্দিন চৌধুরী, পশ্চিম মাসদাইরের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে বজলুর রহমান ও কাশিপুর উত্তর গোয়ালবন্দের হেলালউদ্দিন মুন্সীর ছেলে মো. হামিম মুন্সী।


সূত্রমতে, রিট আবেদনকারী প্রত্যেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের লোক হিসেবে পরিচিত। আর তাদের করা সীমানা সংক্রান্ত এই মামলার অজুহাতে নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ