ফতুল্লা থানা আ’লীগে বিতর্কিতদের দাপট

নারায়ণগঞ্জ মেইল: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সম্মেলনের গত রবিবার ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। তবে কমিটিতে বিএনপির সক্রিয় কর্মী, ভূমি দস্যু ও সুবিধাবাদিদের সুযোগ করে দেয়ায় দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে। এম সাইফউল্লাহ বাদলকে সভাপতি ও আলহাজ¦ এম শওকত আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। বিগত দিনে ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না এমন ব্যক্তিদেরও কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে।

জানাগেছে, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে আশরাফুল আলমকে। কাশীপুর বাংলাবাজার রোড প্রেসিডেন্ট বাড়ি এলাকার মনসুর প্রেসিডেন্টের পুত্র আশরাফুল আলম। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে কোন সময়ই সম্পৃক্ত ছিলেন না তিনি। বিএনপি-জামাতের অর্থ যোগান দাতা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি রয়েছে আসরাফুল আলমের। তার দুই ভাতিজা জামাতের রোকন সদস্য বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যার মধ্যে একজন বিদেশে অবস্থান করছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এলাকায় ফিরে আসলেও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফের বিদেশ চলে যান জামাতের ঐ রোকন সদস্য। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার নজরেও রয়েছে। এমন একটি পরিবারের সদস্যকে থানা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়ায় এনিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। যিনি আওয়ামীলীগের কোন রাজনীতির সাথেই ছড়িত ছিল না এমন ব্যক্তিকে কেন পদ দেয়া হল-এমন প্রশ্ন সাধারণ কর্মীদের।

এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, আসরাফুল আলম আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিবেন। তাই নৌকা প্রতীক পেতে সভাপতি এম. সাইফুল্লাহ বাদলের আশির্বাদে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের পদ পেয়েছেন তিনি। সাইফুল্লাহ বাদল আগামীতে কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অংশ না নিলে আসরাফুল আলমকে সমর্থনও দিবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছে গিয়াসউদ্দিন। কাশীপুরে ভূমিদস্যুদের গডফাদার বলা হয় তাকে। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় দৈনিকগুলোতে গুরুত্ব সহকারে সংবাদও প্রকাশ হয়েছিল। স্থানীয়রা তাকে ডাকাত গেসু হিসেবেই চিনেন।

ফতুল্লার কুতুবাইল, রামারবাগ, কাঠেরপুল এলাকার বহুরূপী আলোচিত মুখ হলো মোস্তফা কামাল। তাকেও রাখা হয়েছে সহ-সভাপতি পদে। স্থানীয়রা তাকে বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে চিনলেও সম্প্রতি সময়ে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে হঠাৎই গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করেছেন মোস্তফা কামাল। রামারবাগের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বর্তমানে দেশের প্রভাবশালী এক ব্যক্তির দাপট দেখিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিভিন্ন সময়ে ঐ এলাকাগুলোতে যে কয়টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর প্রতিটির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা ছিল মোস্তফা কামালের। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বলছেন, বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের পদ নিয়ে নিজেদের সুবিধা মত কমিটি গঠন করেছেন সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী। দলের দু:সময়ের অনেক নেতাকে বাদ নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার এম সাইফউল্লাহ বাদলকে সভাপতি ও এম শওকত আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাদারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ