নারায়ণগঞ্জ মেইল: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। দীর্ঘদিন পরে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিলে নারায়ণগঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকা থেকে নেতাকর্মীর ঢল নামে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই মিছিলে অনুপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের জনদাবির পক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে খোকনের অনুপস্থিতি ক্ষোভের সঞ্চার করেছে নেতাকর্মীদের মনে। আর তাই সরকারবিরোধী স্লোগানের পাশাপাশি সেক্রেটারি উধাও কেনো সে বিষয়টাও জানতে চান তারা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সকালে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ার বঙ্গবন্ধু সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা। কয়েক হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপি’র প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানা উপজেলা থেকে যুবদলের নেতাকর্মীরা চাষাড়া শহীদ মিনার ও এর আশেপাশে এসে জড়ো হতে থাকে। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুবদল নেতাকর্মীরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকে। সকাল সাড়ে নয়টায় জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু এবং সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপনের নেতৃত্বে চাষাড়া শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা।
অনেকদিন পর নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি থাকায় কয়েক হাজার নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটেছিলো এদিন, কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসে তাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে দেখতে না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। অনেক নেতা-কর্মী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, যেকোনো সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের বড় কর্মসূচির আয়োজনের পুরো দায়িত্ব থাকে সাধারণ সম্পাদকের কাঁধে। তিনি সকলকে কর্মসূচিতে আসার জন্য যোগাযোগ করবেন কিন্তু আমরা যুবদল সম্পাদকের কাছ থেকে এই সহযোগিতাটা কোনদিনই পাইনি, এবারও পেলাম না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সেক্রেটারি গোলাম ফারুক খোকন রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে কোনদিনই সক্রিয় ছিলেন না। ২০০৬ সাল থেকে গত ১৫ বছর সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে বিএনপি, আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন অসংখ্যবার। অনেক নেতা-কর্মী দিনের পর দিন জেল খেটেছেন কিন্তু এসবের ধার ধারেন না যুবদল সেক্রেটারি খোকন। তিনি কখনো মিটিং মিছিলে আসেন না বরং বিলাসী জীবন যাপন করে থাকেন। রূপগঞ্জের ধনকুবের দিপু ভূইয়ার ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় রাজপথে অবদান না থাকার পরেও বিএনপি’র উপর মহলে লবিং করে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে গেছেন।
অনেকের মতে রূপগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আঁতাত করে চলেন খোকন। আর তাই তাকে কখনো নাশকতার মামলার আসামি হতে হয়না। যেখানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র তৃণমুলের নেতাকর্মীরা ডজন ডজন মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হয় সেখানে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে কখনো আদালতে আসতে হয় না গোলাম ফারুক খোকনকে। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে সরকারি দলের সাথে মিলেমিশে রাজনীতি করার কারণে- এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।