নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগগঞ্জের রাজপথ কাঁপানো ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা রাজনীতির মাঠে অনেকটা নিরব। ছাত্রলীগের পদ যাওয়ার পর থেকে যুবলীগের কমিটির পদ প্রত্যাশায় থাকলেও উত্তর-দক্ষিণ মেরুর দ্বন্দ্বের কারণে যুবলীগের কমিটি কবে নাগাদ হবে না তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজনের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর এখনো পর্যন্ত সকলেই রাজনীতির মাঠে পদহীন। শুধুমাত্র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান নান্নু ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের কমিটিতে সদস্য পদে রয়েছেন। সানির আগের কমিটির সভাপতি এহসানুল হক নিপুও এখনো কোন পদে নেই। জেলা যুবলীগের সভাপতি পদের আশায় এখনো অপেক্ষায় রয়েছেন।
জানা যায়, বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে অনেকটা বৈরী সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলনে আবদুল কাদির সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সম্মেলনে ছিল আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের অবস্থান। এছাড়াও সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দিতাকারী জাকিরুল আলম হেলালকে করা হয় সিনিয়র সহ-সভাপতি, আসিফ হোসেন মানুকে সহ-সভাপতি ও শাহ নিজামকে করা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে শাহনিজাম মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জাকিরুল আলম হেলালকে সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্যদিকে আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা যুবলীগ সভাপতি আবদুল কাদির জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হতে কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করেছিলেন। কিন্তু শেষতক শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক ও কাদির হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
এর আগে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। সেই থেকে যুবলীগের বিভক্তি শুরু হয়। তবে ওই সংগঠনটি বিএনপির জোট সরকার আমল থেকে শুরু করে ১/১১ এর কঠিন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে বেশ ভূমিকা রেখেছিল। জেলা যুবলীগ এখন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতারা এখন মূল দলের কমিটিতে রয়েছেন।
অপরদিকে, শহর যুবলীগই এখন মহানগর যুবলীগের ব্যানারে কর্মসূচী পালন করছে। সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু উত্তর মেরুর ও সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল দক্ষিণ মেরুর নেতা। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। আর পদহীন থাকায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতারাও এখন রাজনীতিতে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছেন। মূলত ছাত্রলীগ ছাড়লেই রাজনীতির মাঠে অনিশ্চিত গন্তব্য অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি সহসাই আসছেনা। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিবাদমান দুটি গ্রুপ যা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু নামে পরিচিত- এই মেরুকরণের দ্বন্দ্বের কারণে জেলা যুবলীগের কমিটি আটকে আছে বলে জানা গেছে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে। যদিও উত্তর মেরু থেকে জেলা যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক দুই ছাত্রলীগ সভাপতির আহসানুল হাসান নিপু ও সাফায়েত আলম সানির নাম প্রস্তাব করা আছে। কিন্তু দক্ষিণ মেরুর সাথে সমন্বয় করে কমিটি গঠনের নির্দেশনা রয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের পক্ষ থেকে। আর এই সমন্বয়ের অভাবেই আটকে আছে জেলা যুবলীগের কমিটি। ফলে ছাত্রলীগ শেষ করে পদহীন ঝুলে আছে অসংখ্য উদীয়মান নেতা, যাদের গন্তব্য এখনো অনিশ্চিত।