নারায়ণগঞ্জ মেইল: বর্ষা মৌসুম শুরুর সাথে সাথে নগরবাসীর মনে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। সেই আতঙ্ক আরো বেড়ে যায় ঘন ঘন বৃষ্টিপাত হতে থাকলে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের বেশীরভাগ এলাকাই পানির নীচে চলে যাওয়ায় ডেঙ্গু মশার প্রজনন ও বিস্তার বহুগুণ বৃদ্ধি পেলেও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ চোখে পরছে না নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের। গত বছরের এ সময়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও এবার করোনা ভাইরাসের উছিলা দেখিয়ে নির্বিকার বসে আছেন তারা, ফলে ডেঙ্গুর ভয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে নগরবাসীর মনে।
সূত্রে প্রকাশ, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দেশেও এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণে মুত্যুর সংখ্যাও দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কায় নেওয়া হচ্ছে নানাবিধ প্রতিরোধী পদক্ষেপ। অথচ গত বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্বও বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই আগাম পদক্ষেপ না নেওয়া না হলে এবারও ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। করোনার কারণে সব ‘ফোকাস’ সেদিকে চলে গেছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের দিকটা দুর্বল হওয়ার শঙ্কা তাদের।
অত্যাধিক ঘনবসতির জেলা নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গু রোগের ধারক বাহক এডিস মশার উৎপত্তি ও বংশ বিস্তারের সুযোগ অনেক বেশী। তাছাড়া করোনার ভয়ে নারায়ণগঞ্জের বেশীরভাগ মানুষই তাদের নিজ গৃহে অবস্থান করছেন, ফলে মশার উৎপাদনস্থলগুলো থেকে যাচ্ছে অরক্ষিত, সেখানে মানুষের যাতায়াত না থাকায় দ্রুতই বৃদ্ধি পাচ্ছে মশার সংখ্যা। আর এসব মশার অত্যাচারে অতিষ্ট নারায়ণগঞ্জের মানুষ। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মশার উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে ডেঙ্গুর আশংকা। কিন্তু করোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধের দিকে নজর নেই সিটি কর্পোরেশনের। ফলে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বেড়েই চলেছে নগরবাসীর।
এদিকে, মশা প্রতিরোধে ব্যর্থতার পর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর তেমন দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। যা নিয়ে মেয়র আইভীকে নিয়ে সমালোচনা করেছেন নগরবাসী। কেননা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মেয়র ব্যাপক উন্নয়ণের দাবী করলেও যথাযথ নাগরিক সুবিধা পায়নি নগরবাসী। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। নগরবাসীর এই দু:সময়ে মেয়রের নীরব ভূমিকায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে।
জানাগেছে, করোনা ভাইরাস মোকাবেলা প্রতিরোধে ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, র্যাব-১১সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও এখনো পর্যন্ত নীবর ভূমিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। মশা নিধনে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় তার ব্যর্থতার কারণে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা বলছেন, মেয়র ব্যাপক উন্নয়ণ করলেও সেই কাজের টেন্ডার পাচ্ছেন তারই ঘনিষ্টজনরা। তাহলে কি ঘনিষ্টজনদের সুবিধা নিশ্চিত করতেই তিনি কি এতো উন্নয়ণ করছেন। নয়তো এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কোন না কোন পদক্ষেপ নিতেন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী।