নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটি নেই প্রায় চার মাস। যে কোন সময় ঘোষনা হতে পারে আহবায়ক কমিটির নাম। আর এই আহবায়ক কমিটিতে স্থান পেতে দীর্ঘদিন নিস্ক্রিয় থাকা অনেক নেতাকর্মী সরব হতে শুরু করেছেন। দু:সময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে মামলা হামলার শিকার ত্যাগী নেতাকর্মীদের পিছনে ফেলে গত এক যুগ ঘুমিয়ে থাকা এসব নিস্ক্রিয় নেতারাই এখন স্বপ্ন দেখছেন যুবদলের নেতৃত্বে আসার। আর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাও পেছন থেকে কলকাঠি নেড়ে যাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে। তবে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে এসব হাইব্রিডদের নেতৃত্বে কমিটি দেয়া হলে তৃণমূল তা মেনে নেবে না বলে হুশিয়ারি জানিয়েছে।
নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। সে সময়ে বেশ ডাকসাইটে নেতা ছিলেন তিনি। তৎকালীন সাংসদ কমান্ডার সিরাজুল ইসলামের ভাতিজা জোসেফ দাবড়িয়ে বেড়াতেন পুরো নারায়ণগঞ্জ শহর। কিন্তু ২০০৬ সালে দল ক্ষমতা ছাড়ার পর খোলসে ঢুকে পরেন জাঁদরেল এই ছাত্র নেতা। সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন তিনি। ফলে নতুন প্রজন্মের অনেক নেতাকর্মীর কাছে অচেনা এক নাম হয়ে উঠে মাজহারুল ইসলাম জোসেফ।
এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মহানগর যুবদলের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পরে ফের আলোচনায় আসা শুরু করেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলয়কে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিতে থাকেন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। সেই সাথে আসন্ন মহানগর যুবদলের কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে নিজেকে প্রচার করতে থাকেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নাম সর্বস্ব কিছু স্থানীয় গলমাধ্যমে।
তবে গত প্রায় এক যুগে দলের চরম দু:সময়ে নিস্ক্রিয় থাকা জোসেফকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না যুবদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কারন এ সময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থকদের। পুলিশের হামলার ভয়ে দিনের পর দিন ঘর বাড়ি ছেড়ে যাযাবর জীবন কাটাতে হয়েছে, গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন বহুবার। আর তাই তাদের দাবি নতুন কোনো কমিটি দেয়া হলে নেতাকর্মীদের এসব ত্যাগের মূল্যায়ন করতে হবে। কাউকে উড়ে এসে জুড়ে বসতে দেয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি তাদের।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটির বাকী সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু।
আংশিক কমিটি ঘোষনার ৫ মাস পর খোরশেদকেই সভাপতি রেখে ২০১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের কমিটি।