মামুন আনোয়ারের পর এবার আইভীর টার্গেটে খোকা!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: টানা দ্বিতীয়বারের মত নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন লিয়াকত হোসেন খোকা। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে উন্নয়ণে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। তবে সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতকে প্রার্থী ঘোষনার পর থেকে একের পর এক বিতর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা।

জানা যায়, ডালিয়া লিয়াকতকে সোনারগাঁ নাগরিক কমিটি সমর্থন দেয়ার পর পরই ফারিয়া নিটটেক্সের মালিক (সিআইপি) ফেরদৌস ভূইয়া মামুনের সাথে এমপি খোকার বিরোধ সৃষ্টি হয়। একে অপরকে উদ্দেশ্য করে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও দিতে থাকেন। মূলত ছগির আলীকে আগামী পৌরসভা নির্বাচনে ছগির আহম্মেদকে সমর্থন প্রদান করে তাকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন নিশ্চিতে নিজের সর্ব্বোচ্চ প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মামুন।

এরপরই সোনারগাঁ জি আর ইনিষ্টিটিউশনের নামফলক ভাঙ্গা নিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার কয়েকদিন পর বিষয়টি নিয়ে সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়লেও পরবর্তিতে বিষয়টি ধামচাপা পড়ে যায়। হোসেন ও সোনারগাঁ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেছে। ঐ বিরোধকে কেন্দ্র করে ওসমান পরিবারের বিরোধীরাও এমপি খোকার বিরুদ্ধে মানে নেমে পড়েন। এমনকি সোনারগাঁয়ে এমপি খোকার বিরোধীরা আনোয়ার হোসেনের পক্ষে প্রতিবাদ সভা করে খোকাকে অবাঞ্চিত ঘোষনার করেন। একই ভাবে খোকার অনুসারিরাও পাল্টা প্রতিবাদ সভা করেন। পরে বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের পর সাংসদ খোকে স্বেচ্ছায় ক্ষমা করার ঘোষনা দিয়ে কর্মসূচী শেষ করেন আনোয়ার হোসেন।

পরবর্তিতে গত কয়েকদিন ধরে সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার বোনকে কবর দেয়াকে কেন্দ্র করে মেয়রের সাথে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকাসহ সাংসদ শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে বিষোদগার করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। বিজয় দিবসে একটি অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকাকে কবরের জমি দখলের অভিযোগ করেন মেয়র। কবর ভেঙে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা নিজের বোনকে দাফন করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কবরস্থান পরিদর্শন করেছিলেন মেয়র আইভী। একই সাথে কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়কে সাময়িক বহিস্কার ও মৌলভীকে শোকজ করেছেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়ের কবরে নিজের আপন বোনকে কবর দেওয়ার প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা। নিজের বোনের দাফন সম্পর্কে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, করোনায় আক্রান্ত তার বড় বোন খালেদা খানম ডলি ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। করোনা পজিটিভ হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল যেন রাতেই লাশটি দাফন করে ফেলা হয়। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে কবরস্থানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা রাতেই দাফনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আমার বাবার কবরে আমার অপর এক বোনের শ^শুরকে কবর দেওয়া হয় এবং পরে আমার বোনের শ^শুর বাড়ির লোকজন কবরের জমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্রয় করে নেয়। আমার বোনকে ওই কবরে সমাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে বোনের শ^শুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আপত্তি জানায়। পরে ওই কবরের সামনে থাকা কবর (প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় ডা. শেখ ইসরাইল হকেরও কবর) যেখানে আমার মামা মরহুম মনসুর আহমেদকে ইতিপূর্বে সমাহিত করা হয়েছিল সেখানে কবরস্থ করার জন্য আমার মামাতো ভাই শহিদুর রহমান প্রস্তাব করলে আমরা তা গ্রহণ করি। মেয়র দাবী করেছেন জোর করে কবরটি দখল করা হয়েছে। মূলত ডালিয়া লিয়াকতকে প্রার্থী ঘোষনার পরই বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না লিয়াকত হোসেন খোকার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ