খোকা-আনোয়ার দ্বন্দের ফসল তৃতীয় পক্ষের গোলায়!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: গত কয়েকদিনই শহর ও সোনারগাঁ এলাকা সরব আওয়ামীলীগ এবং জাতীয় পার্টির নেতারা। সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ফটকের সামনে নামফলক ভেঙ্গে দেয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েনে। এই ইস্যুতে শহরে ও সোনারগাঁয়ে এমপি খোকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছিল। পাল্টা সমাবেশও করেছিল এমপি খোকার অনুসারিরা। কবে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচীর শেষ দিন লিয়াকত হোসেন খোকাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে বক্তব্য দেন আনোয়ার হোসেন। এরপরই আনুষ্ঠানিক ভাবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী বন্ধ হয়ে যায়। তবে এমপি খোকা বার বার দাবী করে আসছিল জি আর ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ফটকের সামনে নামফলক ভেঙ্গে ফেলার ঘটনার তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

এদিকে, আনোয়ার হোসেন ও এমপি খোকার দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে পৃথক দুটি গ্রুপ ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করেছে বলে সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ। অনুসন্ধানে জানাগেছে, সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাতের বিরোধ চলে আসছিল। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে দলীয় মনোনয়ন পেতে কায়সার হাসনাত বিভিন্ন কৌলশ অবলম্বন করেও ব্যর্থ হয়েছেন। মূলত খোকার জন টানা দ্বিতীয়বার নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন পাননি কায়সার হাসনাত। গত সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও খোকার দাপটে টিকে থাকতে পারেনি কায়সার হাসনাত। এরপর থেকেই কায়সার হাসনাতের সাথে এমপি খোকার বিরোধ আরো চরম আকারে রূপ নেয়। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে আনোয়ার হোসের সাথে এমপি খোকার দ্বন্দ্ব খবরে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন কায়সার হাসনাত। তাই আনোয়ার হোসেনর পক্ষে সোনারগাঁয়ে সমাবেশ করেছিলেন কায়সার হাসনাত।

কায়সার হাসনাতের মত সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীও। সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে সেলিনা হায়াত আইভীকে বিজয়ী করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন আনোয়ার হোসেন। ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আইভীকে নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু পাঁচ বছর পর নাসিক নির্বাচনে আনোয়ার হোসেনই মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেয়। ঐ সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেয়র আইভীকে উদ্দেশ্য করে আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, নাসিক নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের সাথে আতাঁত করে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিল আইভী। আনোয়ার হোসেনের সেই বক্তব্যের পর অনেকটা নিশ্চুপ ভূমিকায় ছিলেন মেয়র আইভী। তবে আনোয়ার হোসেনর প্রতি ক্ষোভ ছিল মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর। কিন্তু ওসমান পরিবারের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে আনোয়ার হোসেনের দ্বন্দ্ব শুরু হওয়া মাত্রই পরোক্ষ ভাবে চাচার পাশে দাঁড়ান মেয়র আইভী। এদিকে, এমপি খোকা ও আনোয়ার হোসেনর দ্বন্দ্ব নিরসন হলেও বসে নেই মেয়র আইভী। পুনরায় দ্বন্দ্বকে চাঙ্গা করতে মাঠে কাজ করছেন মেয়র আইভী বলয়ের জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, খোকার কোন ক্ষমা নেই। এছাড়াও আওয়ামীলীগকে ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা বিরোধী দল’ বক্তব্য দেয়ায় দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে আসছেন। মূলত দলের মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়ে দিলে মেয়র আইভীর নিকনির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে কাজ করছে জাহাঙ্গীর আলম-এমনটাই দাবী করেছেন দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা। কেননা সরকারের পক্ষে কোন কর্মসূচীতে জাহাঙ্গীরকে মাঠে দেখা না গেলেও দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টিতে বেশ তৎপর থাকেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ