নারায়ণগঞ্জ মেইল: ব্যবসায়ী সাব্বির আলম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহনের দিন ধার্য ছিলো সোমবার ৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কিন্তু জেল কতৃপক্ষ এই মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা জাকির খানকে আদালতে হাজির না করায় সাক্ষ্যগ্রহন সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান।
জাকির খানের আইনজীবী এডভোকেট রাজিব মন্ডল জানান, সাব্বির আলম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহনের দিন ধার্য ছিলো সোমবার ৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কিন্তু পর্যাপ্ত ষ্কট না থাকায় জেল কতৃপক্ষ জাকির খানকে আদালতে আনতে পারেনি তাই আজকের সাক্ষ্যগ্রহন সম্ভব হয়নি। আদালত আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহনের দিন ধার্য করেছেন।
মামলার বাদি নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের বড়ভাই এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ছোটভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাকির খানকে আদালতে আনার খবরে আদালতপাড়ায় ভিড় করে কয়েকশ জাকির অনুসারি। তারা সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় অবস্থান নেন তাদের প্রিয় নেতাকে দেখার জন্য। শেষে তারা জাকির খানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে আদালতপাড়া ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের শুরুর দিকে অপারেশন ক্লিনহার্ট চলাকালীন একটি অনুষ্ঠানে প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে সাব্বির আলম নিজের জানাযায় সকলকে শরীক হওয়ার আহবান জানিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্য প্রদানের কয়েকদিন পর ১৮ ফেব্রুয়ারী শহরের মাসদাইর এলাকায় নিজ বাড়ির অদূরে আততায়ীদের গুলিতে তিনি নিহত হন।
এরপর ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী সাব্বির হত্যাকান্ডের পর তার বড় ভাই তৈমূর আলম বাদি হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।
সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামী করে চার্জশীট দাখিল করেন। এতে মামলা থেকে গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামী উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রধান আসামী গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেয়ায় মামলার বাদি তৈমূর আলম খন্দকার সিআইডির দেয়া চার্জশীটের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারী আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন।
নারাজি পিটিশনে তৈমুর আলম বলেন, গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির আলম হত্যাকান্ডের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি গোজাঁমিলের চার্জশীট দাখিল করেছেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
এরপর থেকে গত ১১ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট) মামলার শুনানী চলে আসছিল। কিন্তু ২০০৭ সালের ১৮ এপ্রিল তৈমূর আলম খন্দকার যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার এবং ২০০৮ সালের মে মাসে জামিনে মুক্তি পেলেও নানা অজুহাতে নারাজি প্রদানে বিরত ছিলেন তৈমূর।