নারায়ণগঞ্জ মেইল: সভাপতির এসি রুম থেকে বেড়িয়ে এসে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। শহরের কালীরবাজারে তৎকালনি সভাপতি এডভোকেট আবুল কালামের বাসভবনে বসে দোয়া ও আলোচনা সভা বাদ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ঝড় তুলছেন। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে নেতৃত্ব পরিবর্তনে। নিস্ক্রিয় কালাম-কামালের পরিবর্তে দুই তুখোর নেতা এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু দায়িত্ব পেয়েই বদলে দিয়েছেন সকল দৃশ্যপট। এখন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের বুকে যেকোনো কর্মসূচিতে লড়াকু মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে।
তৃণমূলের মতে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আগের নেতৃত্ব ছিলো দুর্বল ও নিস্ক্রিয়। তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম দীঘূদিন যাবত সক্রিয় রাজনীতি থেকে দুরে ছিলেন। তাছাড়া শারিরীকভাবেও তিনি বেশ অসুস্থ্য থাকায় আন্দোলন সংগ্রামে থাকতেন অনুপস্থিত। আর সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বছরের বেশিরভাগ সময়ই থাকতেন সুদুর আমেরিকায়। তাই দলীয় কর্মসূচি পালন হতো অনেকটা দায়সারাভাবে। বেশিরভাগ কর্মসূচি পালন করা হতো সভাপতি আবুল কালামের বাড়ির চারদেয়ালের মধ্যে। সেই থেকে মহানগর বিএনপির নাম হয়ে গিয়েছিলো গৃহবন্দি বিএনপি।
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মহানগর বিএনপির সেই নিস্ক্রিয় কমিটি বিলুপ্ত করে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক এবং এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি ঘোষনার পর থেকেই একটি পক্ষ সরকারের ইন্ধনে এই কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নেন। বিদ্রোহী গ্রুপের সকল বাঁধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে মনোনিবেশ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত দুইজন। তারা মহানগর বিএনপির আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো গঠনের লক্ষ্যে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে থাকেন। নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দরের প্রতিটি অলিগলি ঘুরে ঘুরে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাছাই করে একটি গ্রহনযোগ্য কমিটি গঠনের জন্যে কাজ করেন। এ লক্ষ্যে আয়োজিত প্রতিটি সম্মেলনে তারা উপস্থিত থেকেছেন, ঘরে বসে কমিটি ঘোষনার সংস্কৃতিকে বিদায় জানিয়ে নিজেদের নিয়ে গেছেন অসামান্য উচ্চতায়। অতীতে যা ঘটেনি তাই করে দেখিয়ে দিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যে ইতিহাস সৃষ্টি করেন এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
আগামী ১৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্মেলন হওয়ার সম্ভানা রয়েছে। ইতিমধ্যেই মহানগরের আওতাধীন দুইটি থানা ও একটি উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন করেছেন সংগঠনের আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। শেষ হয়েছে ১৭টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়নের সম্মেলনও। প্রতিটি সম্মেলনে তারা নিজেরা উপস্থিত থেকেছেন। ইতপূর্বে প্রতিটি ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নে সম্মেলন আয়োজন করে কমিটি গঠনের নজির ছিলো না মহানগর বিএনপিতে। সকল সাংগড়ঠনিক কার্যক্রম শেষ করে এখন মহানগর বিএনপির একটি জমকালো সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ দুই ডায়নামিক নেতা। কমিটি গঠনের পর থেকেই একটি গ্রুপের প্রবল বিরোধীতা আর ষড়যন্ত্রের পরেও কমিটি গঠন ও রাজপথের আন্দোলন সমানতালে চালিয়ে যাওয়া সাখাওয়াত-টিপু জুটি এখন নতুন এক মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে।