নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের প্রাণ শীতলক্ষ্যা নদীর উপর একটি সেতুর স¦প্ন দীর্ঘদিন যাবত দেখে আসছে দুই পাড়ের মানুষ। বিশেষ করে নদীর পশ্চিম পাড়ের বন্দরবাসী তাদের আজীবন লালিত এই স্বপ্ন পূরণের আশ^াস পেয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে কিন্তু বাস্তবে তাদের সেই স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। যদিও অতি সম্প্রতি শীতলক্ষ্যা নদীর উপর বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তদুপরি বন্দরবাসীর স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। কারণ শীতলক্ষ্যা নদীর যে স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা বন্দরবাসীর কোনো কাজে আসবে না বরং পদ্মা সেতু পার হয়ে চট্রগ্রামগামী মানুষের দূর্ভোঘ এতে কিছুটা লাঘব হবে। বন্দরের মানুষকে সেই ট্রলার আার নৌকায় করেই নদী পাড় হতে হবে। যদি ১নং খেয়া ঘাট বা ৫ নং ঘাট এলাকা দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা যেতো তবে তা বন্দরবাসীর কাজে লাগতো বলে অভিমত তাদের।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু উদ্বোধনের পরের দিন মঙ্গলবার সরেজমিনে বন্দর খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা গেছে সেই আগের মতোই ভিড় লেগে আছে যাত্রীদের। তারা এখানো ট্রলার আর নৌকায় করেই নদী পাড় হচ্ছেন। এ সময় তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা সেতু নিয়ে ক্ষোভের কথাই জানান।
বন্দরের ইয়াসমিন বেগম কাজ করেন শহরের টানবাজার এলাকার একটি গার্র্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে। সেতু প্রসঙ্গে জানতে চাাইলে তিনি বলেন, যে জায়গায় ব্রিজ হইছে সেখান দিয়ে পাড় হতে গেলে আর চাকরি থাকবে না। কারণ সেখান দিয়ে যেতে হলে সময় লাগবে কয়েকগুণ বেশি। তারচেয়ে দুই টাকা দিয়ে ট্রলারে পাড় হয়ে যাওয়াই ভালো। আমাদের এই এলাকা দিয়ে একটা ব্রিজ বানাইয়া দিলে খুব উপকার হইতো।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লোকমান মিয়া ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই সেতু আমাদের কথা চিন্তা করে বানায় নাই। এই সেতু বানানো হইছে পদ্মা সেতু পাড় হয়ে যারা চট্রগ্রাম যাবে তাদের জন্যে। তাদের যাতে ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যামে পরতে না হয় সেই জন্যে এই সেতু বানানো হইছে। আমাদের জন্যে বানাতে চাইলে ১নং খেয়াঘাট কিংবা ৫নং ঘাট দিয়ে সেতু বানাইতো।
জানা গেছে, শীতলক্ষ্যা নদীর ওপরে নির্মিত ‘তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু’ দেশেরে ১৮টি জেলাকে সরাসরি চট্টগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করেছে। র্অথাৎ ঢাকায় প্রবেশ না করেই চট্টগ্রামে যাতায়াত করতে পারবে দক্ষণি-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারন্সেরে মাধ্যমে এই তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন করবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সেতুতে সংযুক্ত হচ্ছে দেশের ১৮টি জেলা। এর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করইে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতে পারবেন দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলসহ ৮ জেলার বাসিন্দারা। সংযুক্ত জেলাগুলো হলো- নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, বাগরেহাট, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি।