নারায়ণগঞ্জ মেইল: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেনা বলে এখনো অনঢ় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সরকারী দল আওয়ামীলীগ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে। তবে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে নারাজ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্¦। তাই বিএনপিকে ভেঙ্গে তার একটি অংশকে নির্র্বাচনে আসতে রাজি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। সে লক্ষ্যে দেশের হেভিওয়েট কিছু রাজনীতিবীদকে কৌশলে কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সে সূত্র। ইতিমধ্যে সে আভাসও মিলেছে। বিএনপির সাবেক নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ওলি আহমেদের নেতৃত্বে নতুন বিএনপি গঠনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। আর সে তালিকায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের নামও রয়েছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তৈমূর নাকি তাদের সাথে এ বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন এবং সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। যার প্রথম প্রচেষ্টা হলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে কোন্দল সৃষ্টি করা এবং কিছু নেতাকে পথভ্রষ্ট করে নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসা। তারই ড্রেস রিহার্সেল হয়ে গেলো গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার বাড়িতে মহানগর বিএনপির কয়েকজন বিতর্কিত নেতাকর্মীদের ডেকে পদত্যাগের নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে।
জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিবএনপির ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে আহবায়ক এবং এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। সেই কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন বলে জানানো হচ্ছে যদিও এ বিষয়ে যাদের নাম রয়েছে তাদের সকলের মতামত এখনো পাওয়া যায়নি। আর এসব কিছুর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন বহিস্কৃত বিএনপি নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি সরকারের এজেন্ট হয়ে বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের।
তৃণমূল জানায়, একসময় তৈমূর পরিবারের সাথে সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামের পরিবারের ছিলো শত্রুতার সম্পর্ক। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৈমূর তার ছোটো ভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের জন্যে কালামের নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নের জন্যে চেষ্টা করেন। এমনকি খোরশেদ মনোনয়নের প্রাথমিক চিঠিও পেয়েছিলেন যদিও পরবর্তীতে তাদের কাউকেই দলীয় প্রতীক দেয়া হয়নি। সেই থেকেই তৈমূূর পরিবারের সাথে কালাাম পরিবারের ্একটা বৈরী সম্পর্ক বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই কালাম পরিবারের প্রতি তৈমূরের দরদ উথলে উঠার বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে তৃণমূলের কাছে। তৃণমূল মনে করে লেজকাটা শিয়ালের মতো তৈমূূর বাকিদেরও লেজ কাটার চক্রান্ত করছেন।
সূত্র মতে, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং পরবর্তী স্থানীয় সরকার নির্র্বাচনগুলির অভিজ্ঞতা সুখকর ছিলো না বিএনপির জন্যে। আর তাই দলীয় হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেনা। বিএনপির এই সিদ্ধান্তে বেশ বেকায়দায় পরে গেছে সরকারী দল আওয়ামীলীগ। বিএনপির অংশগ্রহন ছাড়া নির্বাচনকে গ্রহনযোগ্য করতে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে তারা বিএনপিকে রাজি করাতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের সিনিয়র অনেক নেতাই এ বিষয়েয় বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে দেশী-বিদেশী লবিষ্ট নিয়োগ করছেন বলেও তারা জানিয়েছেন। এমনকি বিএনপির পুরো দলকে আনতে না পারলে এর একটি অংশকে নির্বাচনে আনার চেষ্টাও চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। আর সে ক্ষেত্রে বিএনপিকে ভেঙ্গে কিছু নেতাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কর্নেল ওলি আহমেদের মতো নেতাদের মাঠে নামানোর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এদের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার আছেন বলেও জানা গেছে। আওয়ামীলীগের ইন্ধনে এরা কৌশলে বিএনপিকে ভাঙ্গার মিশনে কাজ করছেন যাতে করে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির একটা অংশকে নির্বাচনের বিষয়ে রাজি করানো যায়।
সূত্র জানায়, এক সময় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির হেভিওয়েট নেতা ছিলেন এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। কিন্তু লোভে পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। এতে করে রাজনৈতিক পরচয় শূণ্য হয়ে পরেন তৈমূর। বিএনপিতে ফিরতে নানা চেষ্টা তদবির চালিয়েও ব্যর্থ হন। তাই প্রতিশোধ নিতে আওয়ামীলীগের এজেন্ট হিসেবে বিএনপিকে ভাঙ্গার মিশনে নেমে পরেছেন- এমনটাই জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
