নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাড়িয়ারচর গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুর রউফের সম্পত্তি জোরজবরদস্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক আল মোস্তফা ওরফে মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে । উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও পেশী শক্তির ব্যবহার করে রাতের আঁধারে স্থানীয় সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল, ইকবাল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম ও সোহরাব হোসেন লালিসা সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করে। ভূমির মালিক আব্দুর রউফ ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আব্দুর রউফ।
লিখিত অভিযোগে আব্দুর রউফ উল্লেখ করেন, উল্লেখিত বিবাদীরা ভূমিদস্যু ও খারাপ প্রকৃতির লােক। তারা আমার সােনারগাঁ থানাধীন চর রমজান সানাউল্লাহ মৌজায় দাগনং-আর,এস,৮২১ দাগে প্রায় ৩৫ শতাংশ নাল হালে ভিটি ক্রয় সুত্রে প্রাপ্ত ও মালিক হয়ে ভােগ দখল করে আসছি। বিবাদীরা আমার উক্ত সম্পত্তি বেদখল করার অপচেষ্টা করে আসছে। আমার তফসিলভুক্ত সম্পত্তি নিয়ে বিজ্ঞা আদালতে মামলা চলমান আছে এবং মহামান্য হাইকোট হতে উক্ত তফসিলভুক্ত সম্পত্তিতে উভয় পক্ষ যাতে কাজ না করতে পারে, এ বিষয়ে স্টে অর্ডার প্রদান করে। মহামান্য হাইকোর্টের স্টে অর্ডার নম্বর
১০৯/২০১৭ তারিখ ০১/০৯/২০১৭ ইং । বিবাদীরা মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে
তাদের কাজ চলমান রাখে। আমি ও আমার পরিবারের লােকজন বিবাদীকে বাঁধা নিষেধ করলে বিবাদীরা আমাদেরকে মারধর করতে উদ্যত হয় এবং হুমকি দেয়। গত ১৪-০৫-২০২২ তারিখ বিকাল আনুমানিক ৫:০০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত বিবাদীরা তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে এসে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমানা করে পুনরায় তাদের শ্রমিক দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ চলমান রাখে। আমার পরিবারের লোক জন বাধা-নিষেধ করিলে বিবাদীরা আমার পরিবারের লোকজনকে এই মর্মে হুমকি প্রদান করে যে, আমি ও আমার পরিবারের লোকজন যদি পুনরায় তাদের কাজে বাঁধা প্রদান করি তাহলে আমাদের হাত-পা ভেঙে ফেলবে, এমনকি খুন জখম করে লাশ মাটিতে পুতে ফেলবে। বিবাদীরা খারাপ প্রকৃতির লোক। সম্পত্তি সংক্রান্ত তারা যেকোনো সময় সুযোগে খুন-জখম সহ দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশঙ্কা বিদ্যমান। উক্ত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অতীব জরুরী।
রবিবার (১৫ মে) সকাল ১০ ঘটিকায় সরেজমিনে উপজেলার আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোঃ আব্দুর রউফের ৩৫ শতাংশ জায়গা রাতের আঁধারে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এলাকায় চররমজান সানাউল্লাহ মৌজায় একটি দাগে ৩৫ শতাংশ কৃষি ও নাল জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকা সত্ত্বেও বালু ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কারনে এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এ নিয়ে স্থানীয় ভোক্তভূগী মো. আব্দুর রউফ হাইকোর্টের আদেশ নামা দেখিয়ে জমি দখলে বাঁধা দিয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে নিজে বাদী হয়ে মোঃ মোস্তফা কামাল ওরফে আল মোস্তফা (৫৫), তার ছোট ভাই ইকবাল হোসেন (৪৭), মোস্তফা কামালের কর্মচারী ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম (৫২), সোহরাব হোসেন (৫৫) এর নামে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় ভোক্তভূগী মো. আব্দুর রউফ বলেন, ৩৫ শতাংশ কৃষি ও নাল জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারপ্রক্রিয়া চলমান এবং হাইকোর্টের ৬ মাসের স্টে অর্ডার আছে, যার নোটিশ মোস্তফা কামালকে পাঠানো হয়েছে। যার নং ১০৯/২০২২। তারপরও হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেডের মালিক মোস্তফা কামাল মহামান্য আদালতের আদেশ অমান্য করে আমার জমিদখল করে নিচ্ছে। তার ভূমিদস্যু হয়ে উঠার নেপথ্যে কারা কাজ করছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক ওবায়দুর রহমান জানান, আল মোস্তফা গ্রুপ কর্তৃক জমি দখলের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সত্যতা পেয়েছি। দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।