নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে বিতর্কিত নেতাদের দাপট বাড়ছে। পর্দার নেপথ্যে থেকে কেউ কেউ আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন, কেউবা সরাসরি কমিটিতে পদ পদবী দখল করে সংগঠনকেও বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত। এমন অনেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারী দলের সাথে আঁতাত করার অভিযোগ, রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামে কোনদিন রাজপথে না থাকার অপবাদও। তবুও নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে এসকল বিতর্কিত নেতাদের আধিপত্যই তৈরী হচ্ছে যা তৃণমূল কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না।
তৃণমূল সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যাক্তিটির নাম হচ্ছে দিপু ভূইয়া। রূপগঞ্জের কথিত রাজকার বংশের উত্তরাধিকার এই দিপু ভূইয়ার বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগের শেষ নেই। দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে তাকে কোনদিনই রাজপথে দেখা যায়নি। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে নেই তেমন কোন মামলা হামলার ঘটনাও। স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাথে লিয়াজো করে চলার কারনেই তাকে পুলিশী ঝামেলা পোহাতে হয়না বলে মনে করেন সেখানকার বিএনপি নেতাকর্মীরা। স্থানীয় বিএনপিতে নিজের আধিপত্য বিস্তারে তার মতোই সুবিধাবাদীদের দিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠন করতে সিদ্ধহস্ত এই বিতর্কিত নেতা। ্এই বিতর্কিত দিপু ভূইয়ার কারনে রূপগঞ্জে মূল্যায়ন পাচ্ছেন না মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে এখন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম নজরুল ইসলাম আজাদ। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের বাড়ি আড়াইহাজার হলেও সমগ্র নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন তিনি। আর এ কারণে নারায়ণগঞ্জে যেখানেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি হচ্ছে, সেখানেই কিং মেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন আজাদ। আজাদের রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি পাচ্ছে না বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ কোনো সংগঠনের ইউনিট কমিটিও। ফলে সর্বত্র এখন আজাদ আতঙ্ক বিরাজ করছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে নজরুল ইসলাম আজাদের পরিচয় কমিটি ম্যাকার হিসেবে। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠনের সময় হলেই নজরুল ইসলাম আজাদ দোকান খুলে বসেন এবং বিভিন্ন দামে পদ-পদবী কেনাবেচা করেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এজন্য কমিটি বাণিজ্যের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি নিয়ে একাধিকবার আজাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিলো বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা, করেছিল আজাদকে লাঞ্ছিত।
এদিকে নজরুল ইসলাম আজাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সরকারি দলের উপর মহলেও। যে কারণে আজাদের কথার বাইরে গেলে প্রশাসন দিয়ে হেনস্তা করান বিএনপি নেতাকর্মীদের- এমন গুঞ্জন রয়েছে পুরো নারায়ণগঞ্জ জুড়ে। আর তাই আজাদের পছন্দমত লোকজনকেই দেয়া হচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আবার যারা কমিটিতে আসতে চাইছেন তারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন আজাদের দরবারে। কমিটি বাণিজ্য আগে গোপনে হলেও আজাদের কল্যাণে না এখন ওপেন সিক্রেট। আজাদ খুশি থাকলে কমিটিতে পদ মিলবে, তানাহলে মিলবে না।
এ দুজন ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নাসিরউদ্দিন, কার্যকরী সদস্য রিয়াদ মো: চৌধুরী, রুহুল আমিন শিকদার, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব শাহ আলম হীরার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা সময়ে বিতর্কিত নানা কর্মান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ। এসব বিতর্কিত ব্যক্তিদেরকে বিএনপির গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ত্যাগী যোগ্য লোকদের দেওয়ার দাবি তাই তৃণমূলের।