পান্না মোল্লার কেরামতি, ১০ লাখে সাইনিং পাওয়ার!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সদ্য ঘোষিত ফতুল্লা থানা বিএনপি’র কমিটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে নেতাকর্মীদের মাঝে। কমিটিতে যোগ্য অনেক নেতাকে মাইনাস করে বিশেষ একজনের প্রেসক্রিপশনে অদক্ষ অযোগ্য নেতাকর্মীদেরকে পদায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। সেইসাথে কমিটিতে তিনজনের সাইনিং পাওয়ার নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তৃণমূল দাবি করছে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে যুগ্ম-আহ্বায়ক হয়েও সাইনিং পাওয়ার পেয়েছেন পান্না মোল্লা। আরে সকল অভিযোগের তীর জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন এবং সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের দিকে। টাকা খেয়ে এ দুজন মিলে বিতর্কিত এই কমিটি অনুমোদন করেছেন বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

দলীয় সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আওতাধীন পাঁচটি থানা এবং পাঁচটি পৌরসভা কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল গত ২০ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে প্রায় সবগুলো ইউনিট কমিটিরই পরিচিতি সভা সম্পন্ন হয়েছে। অথচ ফতুল্লা থানা কমিটির অনুমোদনের কাগজ প্রকাশ হয়েছে সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারি। তৃণমূলের দাবি এ সময়টাতে কমিটি বাণিজ্য করেছেন জেলা বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা। ফতুল্লা বিএনপির অলিখিত অভিভাবকের ইশারায় তার পছন্দমতো লোকদের টাকার বিনিময়ে অন্তর্ভুক্ত করেছেন কমিটিতে। সেইসাথে সেই অদৃশ্য ইশারায় আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের সাথে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক পান্না মোল্লাকেও সাইনিং পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। যাকে নজিরবিহীন বলছেন ফতুল্লা বিএনপির নেতাকর্মীরা। অনুমোদিত দশটি কমিটির কোথাও এরকম ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে হতাশা ব্যক্ত করেছেন তারা।

সূত্র জানায়, ১০টি ইউনিট কমিটি গঠনের অনুমোদন হয়েছিল ২০ জানুয়ারি। এদিন ফতুল্লা থানা বিএনপি’র কমিটিও অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। অনুমোদিত সেই কমিটিতে তৃতীয় ব্যক্তিকে সাইনিং পাওয়ার দেওয়ার কোনো কথার উল্লেখ ছিলো না। গণমাধ্যমে সেই অনুমোদিত কাগজটিও প্রকাশ পেয়েছে। পাশাপাশি আরো একটি অনুমোদিত কাগজ প্রকাশ পেয়েছে যেখানে হাত দিয়ে লিখে দেয়া হয়েছে আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের পাশাপাশি প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ককেও সাইনিং পাওয়ার দেয়া হলো। পুরো কমিটির কাগজ কম্পিউটারে টাইপ করা থাকলেও এই কথাটুকু লেখা আছে কলম দিয়ে। এতে করে কমিটি বাণিজ্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি।

সূত্র আরও জানায়, গত ২০ জানুয়ারি ফতুল্লা থানা বিএনপি’র অনুমোদিত কমিটিতে যোগ্য নেতা কর্মীদের স্থান দেওয়া হয়নি দাবি করে সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম টিটু কমিটির কাগজ না নিয়ে চলে এসেছিলেন। সেদিন তিনি ঢাকার একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত কমিটি বিতরণ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, এখানে অনেক অযোগ্য অদক্ষ লোককে পদায়ন করা হয়েছে যাদের অন্তর্ভুক্তি কমিটিকে বিতর্কিত করেছে। তাই এদেরকে বাদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের স্থান দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। তাই সেদিন তিনি কমিটি না নিয়েই ফিরে এসেছিলেন অথচ সেই কমিটিতে হাতে লিখে কাউকে সাইনিং পাওয়ার দেওয়ার কথাটি উল্লেখ ছিলো না। এ ঘটনার ১৭ দিন পরে সেই একই কমিটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হলো। সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হলো পান্না মোল্লার সাইন করার ক্ষমতার কথা।

একই কমিটির দুই রকম অনুমোদনের কাগজ ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। সেই সাথে সমালোচনার ঝড় বইছে নেতাকর্মীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এর বিপক্ষে লেখালেখি করছেন নেতাকর্মীরা। আর এই অপকর্মের দায় দিচ্ছেন তারা জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে। ১০ লাখ টাকার বিনিময় পান্না মোল্লা সাইনিং পাওয়ার কিনে নিয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল। তাই এই কমিটিকে তারা প্রত্যাখ্যান করে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিয়ে নতুন কমিটি দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ