ইউনিট কমিটি ছাড়াই যুবদলের তিন প্রজন্ম!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পরপর তিনটি কমিটির নেতারা তাদের আওতাধীন কোনো ইউনিট কমিটি গঠন করতে পারেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতার কারনে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী। খোরশেদ-মন্তু কমিটি তিন বছর দায়িত্বে থেকেও ব্যর্থ হয়েছেন ইউনিট কমিটি দিতে। এরপর মন্তু-সজল কমিটিও ২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তারা পূর্বসূরিদের মতো ইউনিট কমিটি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ বর্তমান সজল-সাহেদ কমিটি ছয় মাস পার করলেও তারাও কোনো সুখবর দিতে পারেনি কমিটি গঠনের বিষয়ে। গত তিন কমিটির নেতৃত্বে থাকা নেতাদের উদাসিনতা ও কমিটি বানিজ্যের কারনে তৃণমূল পর্যন্ত নেতৃত্বের বিস্তার ঘটাতে পারেননি মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া কোনো রাজনৈতিক পরিচয় না থাকায় আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিতেও শংকা বোধ করেন তারা। তাই অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।


সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর উপজেলা ইউনিট। রয়েছে পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি। এতগুলো কমিটির মধ্যে মাত্র দুটি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষনা করেছে বর্তমান মহানগর কমিটির নেতারা। বাকি ইউনিটগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো কমিটি নেই। মহানগর যুবদলের কমিটিতে বারবার রদবদল হলেও এসব ইউনিট কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মনের আশা আর পূরণ হয়না। অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে যুবদলের রাজনীতি ছেড়ে বিএনপির মূল দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে গেছেন। বাকি যারা দীর্ঘদিন যাবত একটি রাজনৈতিক পরিচয়ের আশায় রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের সকলের একটাই দাবি আর তাহলো যত দ্রুত সম্ভব ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠনকে আরো গতিশীল করা এবং দীর্ঘদিনের কমিটি খড়া ঘুচিয়ে তৃণমূলের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া।


জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মনতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহসভাপতি, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় পাঁচ মাস পর ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদ।


২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর ঘোষনা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভ আহবায়ক কমিটি। মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহবায়ক আর মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ঘোষনার প্রায় দুই বছর এই পাঁচজনেই আটকে ছিলো মহানগর যুবদল। এই সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের কমিটি পূর্নাঙ্গ করতে পারেনি, পারেনি কোনো ইউনিট কমিটিও ঘোষনা করতে। তাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ব্যানারে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে আসা নেতাকর্মীদের কারো কোনো পদ পদবী বা রাজনৈতিক পরিচয় ছিলো না।


২০২৩ সালের ২৯ আগষ্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহবায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষনা করা হয় মহানগর যুবদলের তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এই কমিটিও ছয় মাস অতিবাহিত করে ফেললো কিন্তু ইউনিট কমিটিগুলি গঠন করতে পারেনি। এর ফলে নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই জীবন বাজি রেখে লড়াই করে যাচ্ছে সরকার পতনের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ