শহরের বাপ্পি চত্বরে অনুমোদনহীন বহুতল ভবন নির্মাণ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৮ নং ওয়ার্ডের বাপ্পি চত্বরে রাজউক এবং সিটি কর্পোরেশনের কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই চারতলা ভবনের উপর পঞ্চম তলা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় নাজমুল এবং সাঈদ হাসান গংদের বিরুদ্ধে। এছাড়া জনগণের চলাচলের রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। রাজউক থেকে দুই দফা চিঠি দেয়া হলেও এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হলেও কোনো নির্দেশনারই তোয়াক্কা করছেন না ভবন মালিক- এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। অনুমোদনহীন বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চলায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। তাই তারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

সরেজমিনের ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের ১৮ নং ওয়ার্ড এলাকায় বাপ্পি চত্বরের মূল সড়কের পাশেই অনুমোদনহীন ভাবে পঞ্চম তলার নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছে। সেখানে ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, যা ইমারত নির্মাণ আইনের পরিপূর্ণ লঙ্ঘন। তাছাড়া ভবনের পাশ দিয়ে জনগণের চলাচলের রাস্তা অনেকটাই দখল করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, এতে করে এলাকাবাসীর চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্মানাধীন ভবনের রাজউক অনুমোদিত নকশা দাখিলের জন্য ভবন মালিককে দুই দফা নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো কিন্তু তিনি কোনো নোটিশের জবাব দেননি। গত ২৭ অক্টোবর এবং ৩০ নভেম্বর রাজউক কর্তৃক দুই দফা নোটিশ প্রদান করা হয় যার স্মারক নাম্বার ২৫.৩৯.০০০০.১৩৮.৩২.৪০৫.২২ ও ২৫.৩৯.০০০০.১৩৮.৩২। ৩০ নভেম্বরের দ্বিতীয় নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরজমিন পরিদর্শনকালে রাজউক অনুমোদিত নকশা প্রদর্শন না করায় আপনাকে/আপনাদের রাজউক অনুমোদিত নকশা দাখিলের নোটিশ প্রদান করা হয় কিন্তু আপনি নির্দেশ মোতাবেক নির্মাণ সাইডে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন যা ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ এর ৩ বি ধারার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এমতাবস্থায় ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ এর ৩ বি ধারা অনুযায়ী অবৈধভাবে নির্মিত আপনার ইমারতের স্থাপনার অংশটুকু কেনো ভেঙে ফেলে/অপসারণের আদেশ দেয়া হবে না তা আগামী সাত দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারী বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে সকল প্রকার নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।

 

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত ভবন মালিক নারায়ণগঞ্জের রাজউক কর্মকর্তাদের উপর নিজের প্রভাব বিস্তার করে এ পর্যন্ত তিনজন ফিল্ড ইন্সপেক্টর বদলি করিয়েছেন। রাজউকের যে সকল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করতে আসেন তাদেরকেই উপর মহলে তদবির করে বদলি করার ব্যবস্থা করেন তিনি।

 

এ বিষয়ে ভবন মালিক সাঈদ হাসান বলেন, আমরা রাজউকের চিঠির জবাব দিয়েছি। আমাদের সকল কাজ অনুমোদন নিয়েই করা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় কাউন্সিলর এবং সদর মডেল থানার ওসি সাহেবকে জানিয়েছি। স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটিকেও জানিয়েছি। আগামী শনিবার সদর মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আমি আমার সকল কাগজপত্র উপস্থাপন করবো।

 

এ বিষয়ে রাজউক নারায়ণগঞ্জ জোনের অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের ফিল্ড ইন্সপেক্টর শফিক সাহেব বলতে পারবেন।

 

বিষয়টি নিয়ে ফিল্ড ইন্সপেক্টর শফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মাত্র দুদিন হলো নারায়ণগঞ্জে জয়েন করেছি। তাই আমি এ বিষয়ে পুরাপুরি ওয়াকিবহাল না। তাছাড়া আমি এখনো সরজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করিনি। আমি পুরো বিষয়টি জেনে জানাতে পারব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ