এবার টাগারপাড়ে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডব, গুলিবর্ষন

নারায়ণগঞ্জ মেইল: গত ১৯ আগস্ট মাসদাইরে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবের পর এবার ফতুল্লার টাগারপাড় ও গাবতলী এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছেপ্রভাবশালীদের শেল্টারে থাকা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত শুক্রবার রাতে টাগারপাড়ের শিল্প গার্মেন্টসের সামনে এই তাণ্ডব চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসময় সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড গুলি বর্ষন করেছে বলেও জানা গেছে।

 

এঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ভয়ে থানায় অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। কেননা এরা সবাই প্রভাবশালী নেতার শেল্টারে রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসি টিভি ফুটেজ দেখে জানাগেছে, শুক্রবার রাতে স্থানীয় সুলতানের পুত্র শাহীন ও জালালউদ্দিনের পুত্র বিপ্লবের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী মহড়া দিয়েছে প্রায় শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এসময় শাহীন দুই রাউন্ড বর্ষন করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শিরা জানিয়েছেন।

 

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দুইদিন আগে চাকুসহ বিপ্লবকে আটক করে স্থানীয় যুবকরা। পরবর্তিতে বিপ্লবকে গাবতলী সোসাইটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সোসাইটির সদস্যরা তাকে হুশিয়ারি দিয়ে ছেড়ে দেয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী মহড়া দেয় শাহীন ও বিপ্লব বাহিনীর সদস্যরা।

 

স্থানীয়রা আরো জানান, শাহীন ‘গ্যাংস্টার’ গ্রুপের সদস্য ছিল। দীর্ঘদিন আগে র‌্যাব-১১ পিস্তলসহ এই গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করেছিল। এরপরই গ্যাংস্টার গ্রুপ নিশ্চুপ ছিল। সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফেল প্রধানের শেল্টারে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠে গ্যাংস্টার গ্রুপের সদস্য শাহীন। রাফেল প্রধানের মাধ্যমে সাংসদ পুত্র অয়ন ওসমানের সাথেও সুসম্পর্ক গড়ে উঠে শাহীনের।

 

শুক্রবার রাতের ঘটনার ভিডিও শনিবার রাতে ছড়িয়ে পড়ছে রবিবার ( ১০ সেপ্টম্বর) দুপুরে বিষয়টি মিমাংসা করতে যান নামধারী কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতারা। এদের মধ্যে রোকন নামে একজন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সাথে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেন – এমনটাই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শিরা। এমনকি শাহীনকে কড়া শাস্তি দিয়েছেন অয়ন ওসমান-এমনও দাবী করা হয়েছে।

 

এব্যাপারে রাফেল প্রধান সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা ফোন রিসিভ করেনি।

হাবিবুর রহমান রিয়াদ জানান , এব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

 

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আজম জানান, এব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌড়াত্ম। প্রতিদিনই শহর ও শহরতলী এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের একের পর এক হামলায় সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ধারালো অস্ত্র হাতে দল বেঁধে চলা, পথিমধ্যে প্রকাশ্যে কাউকে কুপিয়ে জখম করা তাদের কাছে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি ঘঁনায়ই একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং তান্ডব চালাচ্ছে বলে উঠে আসছে স্থানীয়দের বিবরনে। তাই ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

 

অভিযোগ রয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের শেল্টার দিচ্ছেন স্থানীয় কতিপয় রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা। যারা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ব্যবহার করে থাকেন। আর সেই সকল রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা বড় ভাই হিসেবে পরিচিত। বড় ভাইয়ের আশ্রয় প্রশ্রয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ