নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ডায়নামিক সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের জীবন মান উন্নয়নে যে সকল যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছিলেন তার প্রায় সবগুলোই এখন দৃশ্যমান। আইনজীবীদের স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবন এখন আর স্বপ্ন নয় বরং বাস্তব। এছাড়াও আইনজীবীদের মৃত্যুকালীণ নিশ্চয়তা বেনাভোলেন্ট ফান্ড, এলডিপিএস, স্মার্ট কার্ড, ডিজিটাল ডিরেক্টরীসহ আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা এড হাসান ফেরদৌস জুয়েলের হাত ধরেই এসেছে।
নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের দেওয়া এড. জুয়েলের আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিলো দুই কোর্ট একত্রে রাখার চেষ্টা করা। সেই চেষ্টায়ও তিনি এখনও পর্যন্ত সফল, বাকি কাজটুকুও খুব দ্রুত শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এই ডায়নামিক আইনজীবী নেতা।
দুই কোর্ট একত্রে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, সারা বাংলাদেশের সবখানেই দুই কোর্ট একসাথে রয়েছে। তাই নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের প্রাণের দাবি হচ্ছে দুই কোর্ট একত্রে রাখা। এ বিষয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রীর সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি জায়গা দেখে পছন্দ করেছেন এবং খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন। পুরাতন কোর্ট সংলগ্ন যে আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে তা সরকারী অন্য কোনো দফতরকে হস্তান্তর করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী।
এড. জুয়েল বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের ভেতরে যদি আবারো কোর্ট চলে যায় তাহলে এমনিতেই যানজটের নগরী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ তখন চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে। তাছাড়া দুই কোর্ট দুই জায়গায় থাকলে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী সকলেই সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হবে। তাই সকলের সুবিধার্থে দুই কোর্ট একত্রে রাখার কোনো বিকল্প নেই।
সূত্রে প্রকাশ, দেশের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করা হলে আদালতগুলোতে বিশেষ করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এজলাসের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। ফলে বিচারকরা এজলাস ভাগাভাগি করে বিচারিক কাজ চালাতে থাকেন। কিন্তু তাতে করে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ যেমন ভোগান্তির শিকার হতে থাকেন, তেমনি মামলার জট দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। তখন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির স্থান সংকুলানের জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় একটি করে সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২টি জেলায় সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কে পুরাতন কোর্ট এলাকায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ৮ তলা ভবন নির্মাণ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নারায়ণগঞ্জে জেলা জজ আদালত ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ফতুল্লার চাঁদমারীতে অবস্থিত জেলা জজ আদালত ভবনে। জেলা জজ আদালত থেকে নতুন নির্মিত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দূরত্ব কমপক্ষে আড়াই কিলোমিটার। ভবন দু’টি পৃথক স্থানে থাকলে সাড়ে বারশো আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা এবং বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হবেন এই দাবিতে জেলা জজ আদালত ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভবন একইস্থানে রাখার জন্য দাবি জানায় সাধারণ আইনজীবীরা। পরে আইনজীবীদের দাবির মুখে দুই কোর্ট একস্থানে রাখলেও নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ৮ তলা ভবন অব্যবহৃত থেকে যায়।