নাসিকের দুই কাউন্সিলর কারাগারে

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বুধবার (১৫ জুন) নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণ মামলায় কাউন্সিলর খোরশেদ ও জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমানের আদালতে বন্দর থানার একটি হত্যা মামলায় কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কাউন্সিলর খোরশেদ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর আশা মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি।

এ সময় দুই কাউন্সিলরের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি, আফসানা আফরোজ বিভা, শাওন অঙ্কন, মনিরুজ্জামান মনির, অসিত বরণ বিশ্বাস, আব্দুল করিম বাবু, কামরুল হাসান মুন্না, মো. শাহীন মিয়া, সুলতান আহম্মেদ ভুইয়া ও আনোয়ার ইসলাম প্রমুখ।

জানা যায়, বিএনপি নেতা খোরশেদের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার সাঈদা আক্তার গত বছেরর ২৫ আগস্ট খোরশেদের বিাংদ্ধে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে নির্দেশ দেন।

২ সেপ্টেম্বর পিবিআই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। গত ৮ নেভম্বর খোরশেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে ধর্ষণের সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।

প্রতিবেদন দাখিলের পর খোরশেদকে গ্রেপ্তার করতে আদালত ওয়ারেন্ট ইস্যু করলে হাই কোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নির্বাচনের দুইদিন আগে গত ১৪ জানুয়ারী জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও আর আত্মসমর্পণ করেনি খোরশেদ।

এর আগে গত বছরের ১৬ই মে রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর খোরশেদ ও রেহানা আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন সাঈদা আক্তার। ওই মামলায় পুলিশ খোরশেদ ও রেহানা আক্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ (চার্জশিট) পত্র দিয়েছে। এই মামলায় আদালত চার্জ গঠন করেছে।

অপরদিকে, বন্দর উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায় পূর্ববিরোধের জেরে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবুল কাউসারের কাছে আহমেদ বাবুর বিরুদ্ধে হাসিনা বেগম নামে এক নারী নালিশ দেন। বিষয়টি সুরাহা না হলে ওই নারী থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।

সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ মে রাত ৯টার দিকে আহমেদ বাবুকে ধরতে যায় বন্দর থানার এসআই রওশন ফেরদৌসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ।

পুলিশের ধাওয়ায় বাবু বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। চার দিন পর ৪ মে দুপুরে বাবুর লাশ ভেসে ওঠে পুকুরে। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশটি উদ্ধার করেন।

এদিকে ওই দিন ৪ মে রাতে নিহতের মা লিলি বেগম বাদী হয়ে কাউন্সিলর আবুল কাউছার আশাকে হুকমের আসামী করে ১০ জনের বিরুদ্ধে তার ছেলেকে হত্যা ও গুমের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, কাউন্সিলর খোরশেদ জানান, এসব মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে নিয়ে রাজপথের আন্দোলন থেকে আমাকে দূরে রাখা যাবেনা। দ্রুতই আপনাদের মাঝে ফিরে আসবো। আবার দেখা হবে রাজপথে।

কাউন্সিলর আশা জানান, পুরোটাই ষড়যন্ত্র। আমাকে জড়ানো হয়েছে রাজনৈতিক কার্যক্রম ও নাগরিক সেবা থেকে দূরে রাখতে। ষড়যন্ত্র করে আমাকে আটকে রাখা যাবেনা।

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ