নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য। ব্যক্তিগত জীবনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দিপু। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সে বন্ধুত্বের মাঝে তৈরি হয়েছে দূরত্ব। আর শামীম ওসমানের সাথে যার দূরত্ব তার সাথে মিত্রতা তৈরি হয়ে যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা সেলিনা হায়াত আইভীর। এক্ষেত্রেও ঘটেছে তেমনটাই। সময়ের পরিক্রমায় অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু হয়ে ওঠেন মেয়র আইভীর ঘনিষ্ট জন।
অনুসন্ধানী তথ্য বলছে, রাজনীতিতে শেষ বলে যেমন কিছু নেই তেমনি রাজনৈতিক নেতাদের ঘনিষ্ঠতাও বেশিদিন টেকে না। যেমন টেকেনি দিপু আইভীর ঘনিষ্টতাও। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটির দাবি এখন সর্বত্র। আর আসন্ন কমিটিতে সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপুর সম্ভাবনা ছিল প্রবল কিন্তু তার সে ইচ্ছায় জল ঢেলে দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। রাজনৈতিক পাড়ায় গুঞ্জন সিটি মেয়র আইভী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। আর এতে করে আইভী দিপুর সম্পর্কে দেখা দিয়েছে ফাটল, নেই আগের সেই ঘনিষ্ঠতা।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা বিতর্ক। বিশেষ করে সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোঃ বাদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমা হয়েছে কেন্দ্রে। তাই পরবর্তী নেতৃত্বে তাদের না থাকার সম্ভাবনাই প্রবল। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসার সম্ভাবনাই বেশি। সে ক্ষেত্রে সিনিয়র আইনজীবী নেতা আনিসুর রহমান দিপু আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে আলোচনায় ছিলেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি। তাই পরবর্তী কমিটির সভাপতি হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তিনিও। আর এক্ষেত্রে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু। দিপুকে পরাস্ত করে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদ দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সিটি মেয়র আইভী। আর তাই দুজনের সম্পর্কে দেখা দিয়েছে টানাপোড়েন।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আবদুল হাইকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্যের জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় এক বছর পরে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ২০০৩ সালে সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরামকে আহ্বায়ক ও মরহুম মফিজুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।
২০১১ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর পর এস এম আকরাম অভিমান করে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। আর যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুল ইসলাম বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। এরপর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে।