সরকারবিরোধীদের প্রশ্রয়ের খেসারত, আইভীর নৌকা নিয়ে সংশয়!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে নগরবাসীর মনে। বিশেষ করে নাসিক মেয়র পদে কে আসতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। প্রায় ১৮ বছর যাবত ঘুরেফিরে একই মুখ দেখতে হচ্ছে নগরবাসীকে। তাই এবার পরিবর্তন চায় নারায়ণগঞ্জের মানুষ।

এছাড়াও বর্তমান সরকারের বিরোধিতা করা বিএনপি ও বিভিন্ন বামদলের নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেয়ার কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও আইডির উপরে নাখোশ। সরকার বিরোধীদের সাথে নিয়ে চলাফেরার মাশুল এবার তাকে গুণতে হতে পারে। আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা এবার আইভীর কাছে ধরা না দিলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

নগরবাসীর মতে, ২০১৬ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে মেয়র আইভীর সবচেয়ে ঘনিষ্টজন হয়ে ওঠেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর বিভা হাসান। এমনকি সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হয়েও আইভীর চেষ্টায় প্যানেল মেয়র-১ নির্বাচিত হন বিভা। আর এই বিভা হাসান হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী পরিবারের পুত্রবধূ। এক সময়ে জিমখানা পাইকপাড়া এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বিএনপি নেতা মজিদ কমিশনার এবং তার ছোটভাই হাসান আহমেদ। সেই হাসান আহমেদের স্ত্রী হলেন বিভা। মারামারি, সন্ত্রাস এবং নাশকতাসহ একাধিক মামলার আসামি মজিদ ও হাসান দুই ভাই। এমনকি কাশিপুরের ডাবল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি হচ্ছেন তারা দুজন। বর্তমানে হেফাজতের নাশকতার মামলায় রিমান্ডে আছেন হাসান।

এলাকাবাসী জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মজিদ ও হাসান বাহিনীর অত্যাচার কিছুটা কমে গেলেও বিভা হাসান কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরে এবং তিনি আইভীর কাছের মানুষ হয়ে উঠায় আবারও পুরনো রূপে ফিরে যান দুই ভাই। তারা চাঁদাবাজি সন্ত্রাসসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন এবং এর পেছনে আইভীর প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় কেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।

এছাড়াও সরকারবিরোধী নাশকতার অসংখ্য মামলার আসামি বিএনপি নেতা ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে অতিরিক্ত প্রশ্রয়ের অভিযোগও রয়েছে আইভীর বিরুদ্ধে। দু’বছর আগে সংগঠিত হওয়া হকার সংঘর্ষের ঘটনার দিনে আইভীর পাশে খোরশেদকে দেখা গিয়েছিলো, যা কোনভাবেই ভালোভাবে নেয়নি স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার অনুসারীরা উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সরকারি-বেসরকারি এমনকি মসজিদ মাদ্রাসা মন্দিরের সম্পত্তি জোরজবরদস্তি দখল করে নিচ্ছেন। নিরীহ সাধারণ জনগণও তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। মুখে উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে অন্তরে দখল-বাণিজ্যে পুষে রাখে মেয়র আইভী ও তার পরিবার- এমনটাই অভিযোগ নগরবাসীর।

আইভীর বিরুদ্ধে সরকারবিরোধীদের অতিরিক্ত প্রশ্রয় আর বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধ দখলের অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পৌঁছে গেছে। গত ১৮ বছর একটানা মেয়রের দায়িত্বে থাকায় আইভীর এই অধঃপতন বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আর তাই আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্তমান মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানা গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ