নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে “লঘু পাপে গুরু দণ্ড” দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একটি রাজনৈতিক আলোচনা সভায় পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন রনি আর সে কারণেই নাকি তাকে আটক করে পাঁচ মাস আগের হেফাজতের নাশকতার চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো। রনির মত তরুণ প্রজন্মের উদীয়মান নেতার জন্য এটা অনেকটাই কঠিন শাস্তি বলে মনে করছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিএনপি নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যতটা মৌলিক অধিকার ভোগ করে থাকেন, আমরা বিএনপি করার অপরাধে সে অধিকারটুকু থেকেও বঞ্চিত। তা না হলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় প্রতিদিনই বাম রাজনীতিবিদরা সরকারের গুষ্টি উদ্ধার করছে, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে অহরহ বক্তব্য দিচ্ছে, কিন্তু তাদের সমাবেশ কখনো ছত্রভঙ্গ করা হয় না কিংবা গ্রেফতার করে একের পর এক নাশকতার মামলা দায়ের করা হয় না।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো বিএনপি নেতাকর্মীরা যদি একটা মিলাদ মাহফিলেরও আয়োজন করে, সেখানেও পুলিশ হামলা চালায়। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের জন্য সরকারের সমালোচনা করার রাজনৈতিক অধিকার অনেক আগেই দেশ থেকে হারিয়ে গেছে। আর তাইতো সামান্য একটি বক্তব্যের জন্য মশিউর রনির মতো তরুণ ও মেধাবী ছাত্রনেতাকেও একসাথে চারটি নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২১ আগস্ট) রাতে রাজধানী ঢাকার বাংলামোটর এলাকা থেকে মশিউর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। পরে রনিকে ফতুল্লা থানা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান রনির গ্রেফতারের বিষয়ে বলেছিলেন, গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের কাজে বাধা প্রদান ও নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত তিনটি মামলায় রনির সম্পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলাম। কিন্তু সে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। ওই তিন মামলায় রনিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা নং- ৩৩(৩)২১, ৩৪(৩)২১, ৩৫(৩)২১ ও ১(৪)২১
এর আগে গত ১৭ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জম্মদিন উপলেক্ষ মাসদাইর এলাকায় জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. তৈমূর আলম খন্দকারের বাড়ি মজলুম মিলনায়তনে ফতুল্লা থানা ছাত্রদল আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। রনি তার বক্তব্যে বলেন, আজ (গত মঙ্গলবার) ঢাকার কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে হামলা করেছে। আমি জানি না পুলিশ কাদের লোক। তারা কি সাধারণ জনগণের নাকি এককভাবে শেখ হাসিনার ? আমি বলে দিতে চাই যদি এককভাবে শেখ হাসিনার হয়ে থাকেন, আপনারা যে পোশাক পরিধান থাকেন, সেটা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা। যদি ছাত্রদল চিন্তা করে, তারেক রহমান চিন্তা করে, তবে পুলিশের সেই পোশাক খুলে ফেলবে। সেটা আমাদের ওয়ান টু ব্যাপার মাত্র। ছাত্রদল পুলিশকে প্রতিহত করবে।’