নারায়ণগঞ্জ মেইল: প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের কারনে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে লকডাউন চলছে। এদিকে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস, সামনে আসছে ঈদুৃল ফিতর। অথচ এ সময়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির হেভিওয়েট নেতারা দুস্থ্য অসহায় কোনো কর্মীর খোঁজ নিচ্ছেন না। সারা বছর যে নেতার পিছনে থেকে মিটিং মিছিল করেন, সে নেতারাই কর্মীর খোঁজ না নেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলে।
জানা যায়, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন লাভের আশায় কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বেশ কয়েকজন শিল্পপতি নেতা। এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুল ইসলাম ভূইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও আড়াইহাজার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসন থেকে এককভাবে দলীয় মনোনয়ন ছিনিয়ে আনেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কায়নির্বাহী সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান।
নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে সবচেয়ে বেশী নাটকীয়তার সুষ্টি হয় নারয়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন নিয়ে। এ আসনে আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট প্রার্থী একেএম শামীম ওসমানের মোকাবেলা করার জন্য মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় ছিলেন বিএনপির সাবেক এমপি মো: গিয়াসউদ্দিন ও এ আসন থেকে এবার নির্বাচনে অংশ নেয়া মো: শাহ আলম।
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে ধানের শীষের মনোনয়নে ছিলো সবচেয়ে লম্বা লাইন। এ আসনের সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক নাগরিক ঐক্যের এসএম আকরাম। নির্বাচনের প্রায় দুই মাস আগেই ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারে যান এড. সাখাওয়াত। প্রথমে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রাখা হলেও পরবর্তীতে তাকে নেয়া হয় ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে। নির্বাচনের পরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। আর এড. আবুল কালাম ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ মনোনয়নের চিঠি পেলেও বাজিমাত করেন নাগরিক ঐক্যের এসএম আকরাম।
নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে কোটি টাকার বাজেট থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসীর এই চরম দুর্দিনে পাশে নেই এসব বিএনপি নেতারা। প্রাণঘাতি করোনা ভাইস মোকাবেলায় জন সাধারণকে সচেতন করতে কিংবা লক ডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষজনের সহায়তায় এখনো দৃশ্যপটে দেখা মিলেনি তাদের। বিএনপি করেও কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়া এসব নেতাদের প্রতি তাই ধিক্কার জন্ম নিচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর।