তৈমূর-কালামের সমঝোতায় মহানগর বিএনপির সর্বনাশ!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শক্তি খর্ব করে নিজেদের শক্তি বাড়াতে একটি অনৈতিক সমঝোতার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. আবুল কালামের বিরুদ্ধে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সিটি কর্পোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ড মহানগরের অধীনে থাকার কথা থাকলেও সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ড জেলা বিএনপিকে দিয়ে দিচ্ছেন মহানগরের সভাপতি কালাম। বিনিময়ে নিজের সুবিধার্থে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন জেলার কাছ থেকে নিয়ে নিচ্ছেন তিনি। নিজের লাভের কথা কথা চিন্তা করে সংগঠনকে জলাঞ্জলী দিচ্ছেন তারা এমনটাই জানিয়েছে ক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশেই সিদ্ধিরগঞ্জে কমিটি দিচ্ছে জেলা বিএনপি। নির্বাচনের আসন ভিত্তিক কমিটি গঠনের নিয়ম মেনে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ একসাথে রাখা হয়েছে। আর বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন মহানগর বিএনপিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সবই করা হয়েছে চেয়ারপার্সনের নির্দেশনা মেনেই।

তবে মামুন মাহমুদের সাথে পুরোপুরি একমত হননি মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ: সবুর সেন্টু। এ বিষয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান, আমরা কখনো চাইনি সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ড আমাদের কাছ থেকে চলে যাক। তবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতেই হয়। এখানে অদল বদলের কোন বিষয় নেই তবে সংসদিয় আসনের বিন্যাসে সিদ্ধিরগঞ্জকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাথে আর বন্দরকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাথে সম্পৃক্ত করে সে সময় দলীয় চেয়ারপার্সণ কমিটির অনুমোদন দিয়েছিলেন।

সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির মাঝে বিবাদমান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি নিয়ে জল আরো ঘোলা হচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডের অধিকার নিয়ে জেলা মহানগরের রশি টানাটানি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিলো। বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে আসামী করে নারায়ণগঞ্জের আদালতে মামলা ঠুকেছিলেন ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি গুলজার হোসেন খান। আদালত মহানগর বিএনপির সকল কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিলো। ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর এ মামলা দায়ের হয়।

গত প্রায় দেড় বছর যাবত চলমান সেই মামলা থাকা সত্বেও এবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি দিতে চাচ্ছে জেলা বিএনপি। এ লক্ষ্যে তারা একটি উপ কমিটিও গঠন করেছে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনকে টিম লিডার করে এবং জেলা বিএনপির সদস্য এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, একরামুল কবীর মামুন, ইউসুফ আলী ভূইয়া ও মুস্তাকুর রহমানকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা উপ কমিটি।

এদিকে বিএনপির গঠনতন্ত্র মোতাবেক সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত ওয়ার্ডসমূহ মহানগরের অধীনে থাকার কথা। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনও এ নিয়মে তাদের কমিটি গঠন করে থাকে। কিন্তু জেলা বিএনপি মহানগরের সে অধিকার কেড়ে নেওয়ায় তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের মতে সিদ্ধিরগঞ্জে জেলা বিএনপির কমিটি হবে অবৈধ, নিয়ম বহির্ভূত। তাছাড়া আদালতে এ নিয়ে একটি মামলা রয়েছে, রয়েছে স্থগিতাদেশ। এমতাবস্থায় জেলা বিএনপির সিদ্ধিরগঞ্জে কমিটি দেয়াটা কোনভাবেই ঠিক হচ্ছে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ