নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগেরও সিনিয়র সহ সভাপতি। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিষয়ে সময় দিতে হয় তাকে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের মাঝে চলমান একটি মেরুকরণের এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের সাথে একটি বিরোধ সব সময় চালিয়ে যেতে এবং মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে উস্কে দেয়ায় পারদর্শী মেয়র আইভী।
এদিকে রাজনীতির পাশাপাশি যে তাকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে মশার উৎপাত চরমভাবে বেড়ে গেছে আর আসছে ডেঙ্গুর মওসুম। তাই এ মুহুর্তে মশা নিধন প্রকৃয়া গতিশীল করাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন নগরবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মেয়রের এসব উস্কানীমূলক বক্তব্যের উত্তরে অনেক সাধারণ নগরবাসী বিরূপ মন্তব্য করেছেন, অনেকে এও বলেছেন ‘রাজনীতি বাদ দিয়া মশা মারেন’।
জানা যায়, মসজিদ-মন্দিরের সম্পত্তি দখল কিংবা রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষের বক্তব্য বিবৃতিতে আলোচনায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। তবে রাজনীতিতে আলোচনায় না থেকে নগরবাসী নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে আরো সচেতন হতে মেয়র আইভীর প্রতি অনুরোধ করেছেন নগরবাসী। কেননা যথাযত নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নগরবাসী।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ শহরে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার উপদ্রব। প্রতিটি এলাকায় গিয়ে গিয়ে মশক নিধনের কথা থাকলেও তা দৃশ্যমান হয়নি এখনো। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে বিপর্যস্ত নগরবাসীর মাঝে স্বস্তি ফেরাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরগণ যেভাবে আত্মনিয়োগ করেছিলেন, মশা নিধনে তার ছিটেফোটাও দেথা মিলছে না।
এদিকে আর এই মশার উপদ্রবে ইতিমধ্যে অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ নগরবাসী। মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ার তুলনায় মশা নিধনের জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেয়ায় সিটি কর্পোরেশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী ও কাউন্সিলরদের নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। মেয়রকে রাজনীতি ছেড়ে মশা নিধনের আহবান জানিয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেকেই।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। মশক নিধনের জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার ডোবা-নালা, নর্দমায় মশা মারার ঔষধ প্রয়োগ করা হয় নি। ঘরে ও বাইরে কিংবা কর্মস্থলে কোথাও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না মশার কামড় থেকে। আর তাই সামনে বর্ষাকালকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গুর আগাম প্রস্তুতি নিয়ে নগরবাসী চিন্তিত থাকলেও এতে তেমন মাথাব্যথা নেই মেয়র আইভীর। সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এই নিয়ে করছেন ব্যাপক সমালোচনা। শুধু বসতঘর বাড়ি অফিস-আদালত নয় মশার উপদ্রব থেকে চলতি পথেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে ডেঙ্গুর উপদ্রব শুরু হলে সেটি ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করবে বলেই মনে করছেন সংশি¬ষ্টরা।
এদিকে শহরে বৃদ্ধি পাওয়া মশার উপদ্রবের পরও নাসিকের কোনো ব্যবস্থা না থাকার পাশাপাশি সামনের বৃষ্টির দিনকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গুর আগাম কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
শহরের রিকশাচালক আ: করিম বলেন, আগে তো রাস্তায় বসলে কিংবা বাসায় মশা কামড়াতো কিন্তু, এখন তো রিকশা চালানো অবস্থায়ও মশা কামড়ায়। মশার জন্য কোথায় একটু শান্তিতে বসতে পারি না।
নাসিম নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘মেয়রকে মনে হয় মশায় কামড় দেয় না। তাই মশা নিধনে তার ঘুম এখনো ভাঙ্গেনি। আমরা তার ঘুম ভাঙ্গার অপেক্ষায় আর কয়দিন থাকবো’।
রিপন নামে একজন তার মেয়ের হাতে মশার কামড়ের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী মেডাম কি জীবিত আছে নাকি কেউ কি জানেন!!?? তিনি আর তার কাউন্সিলরদের হারিকেন দিয়ে খুজে পাওয়া যাইতাছে না । আমাদের কষ্টের টেক্স এর টাকায় ওনারা বিদেশে হানিমুন করে আর আমরা মশার কামরে অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে থাকি!!?? আমার চার মাস বয়সের মেয়ের এক হাতের অবস্থা এরকম, দূর্নীতি বাঙ্গালী জাতির অধিকার’।