নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আলোচিত চরিত্র নজরুল ইসলাম আজাদ। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কমিটি গঠনের নেপথ্য কারিগর হিসেবে পরিচিত এই কিং মেকার এবার ছাত্রদলের কমিটিতে হানা দিয়েছেন। আজাদের হানায় এখন রক্তাক্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। আজাদের ইন্ধনে জেলা ছাত্রদলের বিভক্তি এখন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। কমিটি বানিজ্যের কিং মেকার নজরুল ইসলাম আজাদকে তাই বিএনপির জন্যে ক্ষতিকর ঘোষনা করে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তৃণমূলের। তানাহলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ধ্বংস করে দেবেন আজাদ-এমনটাই আশংকা তাদের।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ছিলো নেতাকর্মীরা। গত কয়েক বছর আগেও যখন দলের চরম ক্রান্তিকাল চলছিলো, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করাতো দুরে থাক, বাড়িঘরে থাকতে পারতেন না নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা, তখনো রনির সুদক্ষ নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি পালন করেছে জেলা ছাত্রদল। ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বারবার পুলিশের হামলা মামলার শিকার হতে হয়েছে মশিউর রনিকে। জেল খেটেছেন বহুবার। ছাত্রদলের রাজনীতি করে রনির মতো জেল খাটতে হয়নি নারায়ণগঞ্জের কোন রাজনীতিবীদকে।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রদল সভাপতি রনি নিখোঁজ হন বলে দাবি করে তার পরিবার। এর দুদিন পরে ফতুল্লা থানা পুলিশ অস্ত্রসহ রনিকে গ্রেফতার দেখায়। রনির বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ, চারদফা রিমান্ডে নিয়ে করা হয় অমানুষিক নির্যাতন। দীর্ঘ সাড়ে চারমাস কারাভোগের পরে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্ত হন রনি। এখানো সপ্তাহে তিন চারদিন আদালতে হাজিরা দিতে হয় রনিকে। শুধুমাত্র ছাত্রদলের রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত শখ আহলাদকে বিসর্জন দিয়েছেন এই ছাত্রনেতা।
এদিকে রনির সাংগঠনিক দক্ষতার কারনে বিভিন্ন ইউনিট কমিটিগুলোও হয়ে যাচ্ছিলো খুবই সন্তর্পনে। রনি দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়ে বিভিন্ন ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করছিলেন সবাইকে সাথে নিয়ে। কিন্তু রনির এসব কর্মকান্ডে একজনের ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে যায় আর তিনি হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নব্য কিং মেকার নজরুল ইসলাম আজাদ। বিএনপিতে যিনি কমিটি বানিজ্যের নেপথ্য কারিগর হিসেবে সমধিক পরিচিত। নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যে কোন কমিটি গঠনে এখন আজাদের ভূমিকা থাকে সর্বগ্রে। অনেক বিএনপি নেতা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে পদ পেতে হলে আন্দোলন সংগ্রাম না করলেও চলবে শুধু নজরুল ইসলাম আজাদকে ম্যানেজ করতে হবে। আজাদের কাছেতো রয়েছে কমিটি গঠনের টেন্ডার।”
কমিটি গঠনের টেন্ডার যার হাতে সেই আজাদের ব্যবসায় লাল বাতি জ্বালাচ্ছিলেন ছাত্রদল সভাপতি রনি। রনির কারনে ছাত্রদলের পদ পদবীর ব্যবসা জমাতে পারছিলেন না আজাদ। আর তাই কৌশলে এবার ছাত্রদলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, রনির নিজস্ব নেতাকর্মীদের মাঝে কয়েকজনকে ফুঁসলিয়ে আবার কাউকে কাউকে লোভ দেখিয়ে বিপথগামী করে রনির বিরুদ্ধে উস্কে দেন। আর এখাবেই একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী ছাত্র সংগঠনের মাঝে তৈরী হয়ে যায় বিভক্তি যার ফলশ্রুতিতে গত কয়েকদিন আগে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। তবে পানি ঘোলা হলেযে কার মাছ শিকারে সুবিধা হবে তাও বুঝে গেছে ছাত্রদলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাই এবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকেই উচিত শিক্ষা পেতে যাচ্ছেন বিএনপির বিষফোড়া নজরুল ইসলাম আজাদ-সে প্রত্যয়ই জানিয়েছেন তারা।