নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে দিনকে দিন ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে। সারাদেশে যখন বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালন করছে, তখন জেলা যুবদল নেতাদের রাজপথেই খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। পরপর কয়েকটি কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন ছিলেন অনুপস্থিত। আর দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী কিংবা জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীর মতো উপলক্ষে ঘরোয়া কোনো অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয়নি জেলা যুবদলের ব্যানারে। সভাপতি-সেক্রেটারীর নিস্ক্রিয়তায় ক্ষোভে ফেটে পরছে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থকরা।
নেতাকর্মীরা জানান, গত কয়েক বছর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি মানেই ছিলো সেই চিরচেনা দৃশ্য। গেরিলা অপারেশনের মতো বিভিন্ন দিক থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেতাকর্মীরা এসে ব্যানার নিয়ে দাড়ানো মাত্র পুলিশ এসে বাঁধা দিয়ে ব্যানার কেড়ে নেয়া এবং লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া। মাঝে মাঝে প্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে। এতে অনেক মামলায় আসামীও হয়েছেন বহু বিএনপি নেতা। আর তাই কেন্দ্রীয় কোন কর্মসূচি দিলেই বুক দুরুদুরু করতো নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতার্মীদের। রাজপথ ছেড়ে প্রেসক্লাবের পিছনের গলিতে গিয়েও নিস্তার পায়নি বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানেও তাদের তাড়া করেছে পুলিশ।
অথচ আবারো পুরানো রূপে ফিরতে শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। মিটিং আর মিছিলে মিছিলে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে ঝড় তুলছেন বিএনপির নেতাকর্মীর্ ানারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটির ব্যানারে আয়োজিত দুটি কর্মসূচিতে সেই পুরানো রূপেই দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে, ডর ভয়হীন নেতাকর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে ঢেউ তুলেছেন নারায়ণগঞ্জের রাজপথে। ঘন্টাব্যাপী কর্মসূচিতে ব্যস্ততম রাজপথ দখল করে বক্তৃতা দিয়েছেন নেতারা আর মন্ত্রমুগ্ধের মতো দাড়িয়ে দাড়িয়ে সেই বক্তব্য শুনে আগামী দিনের স্বপ্ন বুনতে শুরু করে দিয়েছে জিয়ার আদর্শের সৈনিকেরা। অনেকের মতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর ঘুরে দাড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি, ফলে সুদিন ফিরতে আর বেশী বাকী নাই তাদের।
এরপর থেকে কেন্দ্রীয় সবকটি কর্মসূচিই নির্বিঘ্নে পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গত ১৯ জানুয়ারি ছিলো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৫তম জন্মবার্ষিকী। এদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি, মহানগর যুবদল, জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল, জেলা ও মহানগর ছাত্রদলসহ বিএনপির প্রায় সকল ইউনিট মিলাদ, দোয়া, আলোচনা সভা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেছে। কিন্তু জেলা যুবদলের ব্যানারে ছিলো না কোন আয়োজন।
গত ২৪ জানুয়ারি ছিলো জিয়াউর রহমান-বেগম খালেদা জিয়া দম্পতির কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। এদিনও মিলাদ, দোয়া ও দুস্থ্যদের সাহায্যের মধ্য দিয়ে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোকে স্মরণ করে নেতাকর্মীরা। কিন্তু এদিনও খোঁজ পাওয়া যায়নি জেলা যুবদলের সভাপতি কিংবা সেক্রেটারীকে। জেলা যুবদলের ব্যানারে পালিত হয়নি কোনো কর্মসূচি।
কর্মসূচি পালনের বিষয়ে যখন প্রশাসনের কোনো প্রকার কঠোরতা নেই তখন জেলা যুবদলের আকষ্মিক নিস্ক্রিয়তায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরেও বিএনপির পতাকা তুলে রাখা এসব তৃণমূল তাই জেলা যুবদলকে আবারো রাজপথে দেখতে উদগ্রিব হয়ে আছে।