নারায়ণগঞ্জ মেইল: বাংলাদেশের রাজনীতি দিন দিন ধনী লোকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ দলের জন্য জীবন বাজি রেখে লড়াই করে কিন্তু দল তাদেরকে চূড়ান্ত সময় মূল্যায়ন করেনা। যাদের কোটি কোটি টাকা আছে দল ঘুরে ফিরে গিয়ে তাদের কাছেই আত্মসমর্পণ করে। দলের জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম বিফলে যায় যদি টাকা না থাকে। এমনই এক বাস্তবতার মুখোমুখি এখন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে চারটিতে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপি প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিশিষ্ট শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া চার প্রার্থীই বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক বলে জানা গেছে। এক একজনের প্রায় শত কোটি টাকার উপরে ধনসম্পদ রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনেই ধনীদের মূল্যায়ন করায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মনে হতাশা দেখা দিয়েছে কারণ সাধারণ পরিবারের ছেলে মেয়েরা রাজনীতি করে ভবিষ্যতে মূল্যায়ন না পাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে তাদের মনে।
তৃণমূল মনে করে, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সাধারণ নেতাকর্মীরা। ধনী কোটিপতি নেতাদেরকে তখন হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায়নি অথচ দল যখন চূড়ান্ত মূল্যায়নের সময় এসেছে তখন সেসব রাজপথের পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে কোটিপতি ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কিন্তু যাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো তৃণমূল নেতাকর্মীরা অথচ টাকা না থাকায় সেসব নেতাদের ভাগ্যে মনোনয়ন জোটেনি। ভবিষ্যতে যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তবে দুঃসময়ে রাজপথে আর নেতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা তৃণমূলের।
