নারায়ণগঞ্জ মেইল: স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর এবং নারায়ণগঞ্জের তথাকথিত গডফাদার ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোঃ হাতেমকে সরকারি তোলারাম কলেজের একটি অনুষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছে কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। সরকারি তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মনির হোসেন জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মোঃ হাকিমকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেন।
স্বৈরাচারী সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত মোঃ হাতেম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই শেখ হাসিনার সাথে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নাশকতাকারী উল্লেখ করে তাদেরকে শক্ত হাতে দমনের জন্য শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন এবং এই কাজে ব্যবসায়ীরা তার পাশে থাকবে বলে অঙ্গীকার করেন।
৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতাদের কল্যাণে এবং ছত্রছায়ায় মোঃ হাতেমের মতো লোকেরা দাপটের সাথে রয়ে যায়। গত দেড় বছরে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটা বড় অনুষ্ঠানে মোঃ হাতেমকে নিয়ে মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা। যে বিএনপি স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছে সেই বিএনপি নেতারা হাতেমকে মেনে নিলেও মেনে নেয়নি ছাত্রদল। তাইতো তারা গণঅভ্যুত্থান বিরোধী স্বাধীনতার শত্রু মোঃ হাতেমকে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে, যেটা গত দেড় বছর বিএনপি করতে পারেনি। তাই সর্বত্রই এখন প্রশংসায় আসছেন তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিএনপি যেটা পারিনি সেটা কর দেখিয়েছে ছাত্রদল।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের দুর্ধর্ষ গডফাদার ৎওসমান পরিবারের ঘনিষ্টজনদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ হাতেম। সেলিম ওসমান দীর্ঘসময় বিকেএমইএ’র সভাপতি থাকলে পরিচালনায় ছিলেন মোহাম্মদ হাতেম। ৫ আগস্টের পর সেলিম ওসমান আত্মগোনে থেকেই সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করে হাতেমকে সভাপতি করেন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হলে গত ১০ মে ড্যামি নির্বাচনের মাধ্যমে বিনা ভোটে ফের সভাপতি হন মোহাম্মদ হাতেম। হাতেম প্যানেলে সেলিম ওসমান পর্ষদের ২০ জন রয়েছে। মোহাম্মদ হাতেম সেলিম ওসমানের সহযোগি হয়ে বছরের পর বছর বিকেএমইএ নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
৫ আগষ্টের পর ভোল পাল্টে সে বিকেএমইএ’র সভাপতি হয়ে সেলিম ওসমানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। পাশাপাশি আবির্ভূত হয়েছেন ঝুট বাবা হিসেবে। বিসিক এলাকায় ঝুট ব্যবসার মূল নিয়ন্ত্রক হিসেবে ঘুরেফিরে হাতেমের নামটিই ব্যবহার করেন নানাজন। সরকার পতনের পরও গোটা ফতুল্লায় ঝুট ব্যবসার প্রচ্ছন্ন নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেন হাতেম। ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পর বিকেএমইএতে ওসমানদের ছায়া হিসেবে মোহাম্মদ হাতেম এখনো তাদের নির্দেশনায় কাজ করছেন বলে অভিযোগ সর্বমহলে।
